মঙ্গলবার, ২৪ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

বিএনপির ২৬ মার্চের কর্মসূচি বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ব্যাপকতার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের সব কর্মসূচি বাতিল করেছে বিএনপি। কোনো রকমের জনসমাবেশ বা জনসমাগম না করাসহ সবাই যেন নিয়ম-কানুন মেনে চলেন এবং সাবধানে থাকেন- সেই বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দলটি। গতকাল রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সারা দেশে আমাদের দলের সব কর্মসূচি আমরা বাতিল করেছি। দলের নেতা-কর্মীদের বলেছি যে, তারা যে যেই অবস্থায় আছে, নিজেদেরকে সাবধান রেখে জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরির কাজ করবেন এবং দলের কর্মীরা যেন নিয়ম-কানুন মেনে চলেন, সাবধানে থাকেন সেই বিষয়গুলো নিশ্চিত করবেন।

স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের দিন বিএনপি সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং পরে শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে পু®পমাল্য অর্পণ করে থাকে। এছাড়া স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিএনপি ও তার বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন আলোচনা সভা করে থাকে। করোনাভাইরাসের কারণে এবার তা বাতিল করা হলো।

আরও নিবিড় আইসোলেশন দরকার ঃ করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের ছুটি ঘোষণা ও বিভাগীয়-জেলা পর্যায়ে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, করোনাভাইরাসের চিকিৎসা এবং জনগণকে একজন থেকে আরেকজনকে আইসোলেটেড করে রাখার ব্যাপারটাকে আরও আগেই সরকারের গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল। যদিও তারা (সরকার) এখন তা দেওয়া শুরু করেছেন।

দেরিতে হলেও এটা তারা বুঝতে পেরেছেন। বিলম্বে হলেও সরকার কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছেন। এখন এটাকে যেন নিবিড়ভাবে পরিচালনা করা হয় সেটা তাদেরকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

সরকারের মন্ত্রীরা এমন এমন উক্তি করেছেন- যা মানুষের এই আতঙ্কের মধ্যেও একটা উষ্মা ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, তারা তিন মাস আগে থেকে প্রস্তুত ছিলেন, যার কোনো নজির আমরা দেখতে পারছি না। সরকার এ পর্যন্ত বলছে ৩৩ জন আক্রান্ত হয়েছে। পরীক্ষা করার জায়গা তো শুধুমাত্র একটা, ওই আইইডিসিআর। সে জায়গায় পরীক্ষা হচ্ছে, সবাই পরীক্ষা করতেও পারছেন না।

করোনাভাইরাস রোগীর চিকিৎসায় হাসপাতালের সংখ্যা বৃদ্ধি, চিকিৎসক-নার্সদের প্রশিক্ষণ, তাদের বিশেষ পোশাক ও পর্যাপ্ত টেস্ট কিট সরবারহের দাবিও জানান তিনি। করোনাভাইরাসের কারণে গার্মেন্টস শিল্প রক্ষায় মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থাগ্রহণ এবং প্রান্তিক মানুষের জন্য ভাতা প্রদানে সরকারের প্রতি দাবি জানান বিএনপির এই নেতা। দেশের ৬৩ জন বিশিষ্ট নাগরিকের দেওয়া যুক্ত বিবৃতির প্রতি সমর্থনও জানান তিনি।

খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ নিরাপদ রাখার দাবি : মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা আমাদের তরফ থেকে যতটা সম্ভব অথোরেটির সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে যেন সম্পূর্ণভাবে নিরাপদ রাখা হয়- তার জন্য আমরা কথা বলেছি এবং তারা আমাদেরকে নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে, সেটা তারা করছেন।

তিনি আরও বলেন, তার পরিবারের থেকে আবেদন করা হয়েছে, সম্পূর্ণভাবে মানবিক কারণে তাকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত মুক্ত করা  হোক।

গণমাধ্যমে চাকুরিচ্যুতি অমানবিক : মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা জানতে পেরেছি যে, করোনাভাইরাসের এই ভয়ানক সময়েও সাংবাদিকদের চাকুরিচ্যুত করা হচ্ছে। এ সময়ে তাদেরকে কর্মচ্যুত করা অমানবিক ও অনৈতিকও বটে। আমরা আশা করব যে, গণমাধ্যমের যারা মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় আছেন- তারা এই বিষয়টাকে অবশ্যই বিবেচনা করে এখন যাতে কেউ কর্মচ্যুত না হয়- সেটা যেন বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখেন।

এছাড়াও ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ কালো দিবস (স্বৈরাচার এরশাদ কর্তৃক অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল) উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব দলমত নির্বিশেষে সবাইকে কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সোচ্চার আওয়াজ তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর