বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধে হত্যার বিচার চেয়ে বিপাকে পড়েছেন হতদরিদ্র শ্রমজীবী দুই ভাই। তাদের হয়রানি করতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্র জনতার মিছিলের ওপর হামলা-গুলিবর্ষণের অভিযোগের মামলার আসামি করা হয়েছে। ভিকটিমরা হলেন- বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের চরফেনুয়া গ্রামের মৃত জেলে দেলোয়ার হোসেনের ছেলে জাহিদুল ইসলাম ও রাজিব হাওলাদার। এর মধ্যে জাহিদুল ইসলাম ঢাকার মালিটোলায় স্ক্রিন প্রিন্টের দোকানের কর্মচারী ও রাজিব নদীতে মাছ শিকারের মাধ্যমে জীবিকানির্বাহ করেন।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ২০২১ সালের ৬ মে তার বাবা জেলে দেলোয়ার হোসেন হাওলাদারকে হত্যা করে প্রতিপক্ষ। এ ঘটনায় তিনি আদালতে মামলা করেন। পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত করে একই গ্রামের বাসিন্দা খালেক হাওলাদার, তার স্ত্রী রহিমা বেগম, তিন ছেলে ফারুক হাওলাদার, চান মিয়া হাওলাদার ও লাল মিয়া হাওলাদারকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়। বর্তমানে মামলা বরিশাল আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। জাহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ২০২৪ সালের ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও গুলিবর্ষনের ঘটনায় গত ৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন গুলিবিদ্ধ মো. আলহাজ নামে এক ব্যক্তি। ওই মামলায় ১৩৬ ও ১৩৭ নম্বর আসামি করা হয় জাহিদুল ও রাজিবকে। মামলায় ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সজীব ওয়াজেদ জয়সহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ওই মামলার প্রধান আসামি।
পুলিশের ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজির কাছে দেওয়া আবেদনে জাহিদুল উল্লেখ করেন, তার বাবা হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফারুক হাওলাদারের মামাশ্বশুর নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার সাবেক ওসি এনায়েত হোসেন। তিনি মামলার বাদীর মাধ্যমে হয়রানি করতে আসামি করেছেন। বাবা হত্যা মামলার আসামিরা বিভিন্ন সময় হুমকি দিচ্ছেন। তিনি বলেন, আমরা দুই ভাই জীবনে কোনোদিনই নারায়ণগঞ্জে যাইনি। অথচ আমাদের আসামি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তাসহ আসামিদের বিরুদ্ধে মেহেন্দিগঞ্জ থানায় জিডি করতে যান। কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে জিডি নিয়েছে মেহেন্দিগঞ্জ থানা। এ বিষয়ে মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি ফকরুল ইসলাম বলেন, এ রকম একটি ঘটনা শুনেছি। আমি বিস্তারিত জানি না।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার সাবেক ওসি এনায়েত হোসেন বলেন, অনেক মামলা হয়েছে। এ মামলা সম্পর্কে আমি জানি না।
মামলার বাদী মো. আলহাজের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।