শিশু মান্থিয়ার। বয়স ২০ দিন। জন্ম নিয়েছে মস্তিষ্কে জন্ডিস রোগ নিয়ে। মাত্রা ৩০। সঙ্গে আছে মাল্টিপল সমস্যা- ওজন কম, আছে খিঁচুনি, শক ও ডিহাইড্রেশন, ত্বকে শক্তভাব, রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ও সোডিয়াম ছিল বৃদ্ধি। একদল চিকিৎসকের আন্তরিকতায় সেই নবজাতক এখন খানিকটা সুস্থ। তার দরকার দীর্ঘমেয়াদি ধারাবাহিক চিকিৎসা। জানা যায়, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার শীতলপুর এলাকায় ১১ অক্টোবর জন্ম হয় মান্থিয়ার। দিনমজুর বাবা মন্তু কুমার ত্রিপুরার পক্ষে চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছিল না। বাবা এনে দেন ভেষজ ওষুধ। কিন্তু শিশুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। নিয়ে যাওয়া হয় বারো আউলিয়া এলাকার গুড লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। সেখানকার চিকিৎসক মান্থিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা না করিয়ে বাবা-মা তাকে নিয়ে যায় বাড়িতে।
খবর পেয়ে ডা. মো. গিয়াস উদ্দিন টিপু পাহাড়ের গহিন থেকে খুঁজে বের করে গুড লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যানের আন্তরিকতায় বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় টেস্ট করে চিকিৎসা শুরু করেন। টিপু বলেন, চেম্বারে আনার পর তার বাবা চিকিৎসা না করিয়ে শিশুটিকে বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল। তাকে বাড়ি থেকে উদ্ধার করে মা ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি করি। এরপর চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. ফরিদুল ইসলাম বিনা ফিতে আম্বিলিক্যাল ক্যাথেটার করিয়ে দেন। এরপর মান্থিয়াকে নিয়ে যাওয়া হয় সাজিনাজ হাসপাতালে। সেখানে টানা দুই সপ্তাহ এনআইসিউতে ছিল। এখন শিশুটি এনআইসিইউ থেকে কেএমসিতে (ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ার-অপরিণত বা কম ওজনের শিশুকে মায়ের বুকে সরাসরি ত্বক থেকে ত্বকের সংস্পর্শে রাখা) আছে।
সাজিনাজ হসপিটালের পেডিয়াট্রিক ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের ডা. মো. জোবায়ের আল মাহমুদ বলেন, গত ১৯ অক্টোবর শিশু মান্থিয়াকে সংকটাপন্ন অবস্থায় ভর্তি করা হয়। এখন আগের তুলনায় ভালো। তবে তার দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা দরকার হবে।