কোথায় মুখ লুকালো নারী উন্নয়নের প্রবক্তারা? কোথায় পাচার হল তাদের বিবেক? এরা নিজেদের কর্দমাক্ত লালায় নিজেরাই সাঁতরাচ্ছে। যারা অনৈতিকতার হাট বাজার খুলে বসে আছেন, তাদের কাছে চুনোপুঁটিরা গুরু দণ্ড পায়। আজ অনেকেই প্রবল উৎসাহ উদ্দীপনায় সামিয়া রহমানের বিরুদ্ধে সততার ঝান্ডা প্রদর্শন করছেন। কেন? তিনি কি খুনি? রাষ্ট্রদ্রোহী? সামিয়া রহমান সমাজের কোন সেক্টরের ক্ষতি করেছেন?
যারা সামিয়া রহমান ও মাহফুজুল হক মারজানের সেই থিসিসটি পড়েছেন তারা বলেছেন, থিসিসে মিশেল ফুকোদের নাম মেনশন করা হয়েছে। তাহলে অপরাধের ট্রিগার সামিয়ার দিকে তাক করেছে কেন? পূর্ব থেকেই সামিয়া রহমানের জন্য সুগভীর চক্রান্তের জাল বিছানো হয়েছে। যেখানে সামিয়া দাবি করেছেন ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে দালিলিক প্রমাণ পেশ করতে পারেনি। এদিকে আমার বাংলা মায়ের সন্তানদের তথাকথিত ন্যায়ের পক্ষে স্লোগান শুনে আমি লজ্জায় দু'হাত দিয়ে কান ঢাকি। ভাবছেন সামিয়া রহমানকে তুলোধুনো করে বাজারে নিজেদের ন্যায়পরায়ণতার ব্যাপক বেচা বিক্রি করবেন? করুন, মনের আনন্দে আলু বেগুন পটল বেচা বিক্রি করুন। হুজুগের বাজারে সামিয়ার বিরুদ্ধে হিংস্র উল্লাস উপভোগ করতে ভুলবেন না কিন্তু।
দেশে আরো বড় বড় অপরাধ ঘটছে। দেশের দাগী আসামিরা বিদেশে নির্দ্বিধায় দিনাতিপাত করছে। রাঘব বোয়ালদের টিকিটিও ছুঁতে পারছে না। সামিয়ার অপরাধ কি তাদের চেয়েও বেশি? এসব বাংলা মায়ের সন্তানদের আমি খুব ভালো করে চিনি। এখন কেউ আমাকে দালাল বলে মিষ্টি মধুর বচন ঝাড়বেন। গালভরা নীতিবাক্য কপচাবেন। এটাই তো আপনাদের সম্পদ। ফ্রিতে লেসন দেয়ার জন্য লাইন ধরে যারা। মারজানকে স্কলারশিপ দিয়ে বিদেশ পাঠিয়ে রিওয়ার্ড দেয়া হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশদের দেখেছি সামিয়ার বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে। কেন? সামিয়া নারী বলে? নারীকে ডমিনেট করে যত আনন্দ পাওয়া যায়, অন্যকিছু করে সে আনন্দ পাওয়া যায় না। প্রগতির প্রবক্তারা একজন নারীকে চোর বলে নিজেরাই চুরচুর হয়ে ভেঙে যাচ্ছে। যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংঘবদ্ধ দলটির গোলামী করছেন তাদের তৎপরতা দেখে কেবল হাসছি আর হাসছি।
অন্যের দুঃসময়ে যারা মজা নিচ্ছে, তাদেরকে মানুষ ভাবতে আমি রাজি নই। সামিয়ার হেটার্সদের হিংস্রতা দেখে আমি বিস্মিত, হতবিহ্বল। একজন উচ্চশিক্ষিতা সুপ্রতিষ্ঠিত নারীর বিরুদ্ধে যারা নগ্ন হিংস্রতায় অংশ নিতে পারে, একবার ভাবুন তো উল্টো চিত্রটা! কোনো অল্প শিক্ষিত অসহায় নারীর ক্ষেত্রে এসব পরজীবীদের আচরণ কত ভয়ংকর হতে পারে!! দেশে সামিয়ার চাইতে অধিক সংখ্যক দাগী সামাজিক অপরাধী আছে। আনুশকা আমিন নূরের রেপিস্ট ও খুনি দিহান এবং তার তিন সহযোগীর উপর থেকে রাডার যেন সামিয়ার দিকেই ঘুরিয়ে দেয়া হয়েছে।
মিডিয়ার কথা আর কি বলব! মিডিয়াও সামিয়ার বিরুদ্ধে বিশেষ ওই সিন্ডিকেটকে অনুপ্রাণিত করছে। যেখানে ঢাবি সিন্ডিকেটের মনমর্জি চলছে, সেখানে ট্রাইব্যুনাল নামের এই প্রহসন কেন? কিছু মিডিয়া সামিয়ার বিরুদ্ধে আটঘাট বেঁধে নেমেছে। ফেরিওয়ালা সেজে তারাও লেইস-ফিতা-চুড়ি বিক্রি করতে নেমেছে। শুধুমাত্র পুঁথিবিদ্যায় শিক্ষিত লোকগুলো নোংরাভাবে একজন নারীকে আক্রমণ করেছে। তারা ন্যুনতম সভ্যতার সীমারেখা ছাড়িয়ে গেছে। অসুস্থ সামাজিক পরজীবীগুলো ভুলে যায়, তারও পরিবার আছে। বাবা মা আছেন, সন্তান আছেন। অবশ্য কামারের দোকানে কোরআন পড়ে লাভ নেই।
#স্ট্যান্ড ফর সামিরা
বিডি-প্রতিদিন/শফিক