শনিবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

কেঁচো সারে বদলে গেছে মানিকের জীবন

দিনাজপুর প্রতিনিধি

কেঁচো সারে বদলে গেছে মানিকের জীবন

জমির উর্বরতা আর ফসলের রোগবালাই কম হয় এবং ভালো ফলন হয় কেঁচো সারে (ভার্মি কম্পোস্ট)। আর এই কেঁচো সার তৈরি করে ব্যবহার ও বিক্রিতে সাফল্য পেয়েছেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ পল্লীর শিয়ালখেদা গ্রামের মানিক বর্মা। শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে এ সার তৈরির ফ্রিতে প্রশিক্ষণও দিচ্ছেন তিনি। গত দুই বছরে প্রায় আড়াই থেকে ৩ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। টবে ২৫০ গ্রাম কেঁচো সার থেকে গত ১৫ বছরে বেড়ে এখন নিজ বাড়িসংলগ্ন ৩৩ শতক জমিতে প্রতি মাসে ৫০ টন কেঁচো সার তৈরি করছেন।

কেঁচো ও সার দুটোই বিক্রি করেন তিনি। কর্মসংস্থান হয়েছে অনেক বেকার যুবকের। এ সারের গুণাগুণে উদ্বুদ্ধ হয়ে জমির উর্বরতা রক্ষায় সারের ঊর্ধ্বমুখী বাজারে কেঁচো সার ব্যবহার কৃষকের ভরসার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন অনেকের কাছেই ‘কেঁচো মানিক’ বলে পরিচিত হয়ে উঠেছেন। নিজ বাড়িসংলগ্ন ৩৩ শতক জমিতে বড় টিনের ছাউনি। ছাউনির নিচে কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট) প্রস্তুত হচ্ছে। মেঝেতে বিছানো গোবর। আটজন শ্রমিক গোবর ওলটপালট করে শুকাচ্ছেন। আবার কেউ শুকনা গোবর ঝুরঝুরে করছেন। সেই গোবর বস্তায় ভরে ওজন করছেন। ১০ কেজি থেকে এক টন পর্যন্ত সার কিনছেন কৃষক। তার এই সার স্থানীয় বাজার ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। কেঁচো প্রতি কেজি ২০০০ টাকা এবং সার প্রতি কেজি ১৫ টাকা দরে বিক্রি করেন।

কেঁচোতে তার ভাগ্য বদল। কেঁচো সার বিক্রি করেই পাকা বাড়ি ছাড়াও প্রতি মাসে খরচ বাদে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা আয় হয় বলে জানান তিনি। এখন তিনি শতাধিক গরু নিয়ে খামার গড়ার চেষ্টা করছেন। অনেক বেকার যুবকের কাছে তিনি এখন অনুকরণীয়। মানিক বর্মা ছোটবেলা থেকে বাবার সঙ্গে কৃষি কাজে যুক্ত ছিলেন। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কেঁচো সার তৈরির প্রশিক্ষণ নেন। পরে বাসায় কয়েকটি টবে কেঁচো আর গোবরের মিশ্রণে সার তৈরি শুরু করেন। এরপর টব থেকে চাড়ি, রিং এবং পরে বাড়িসংলগ্ন ৩৩ শতক জমিতে গড়ে তোলেন ‘সবুজ স্বপ্ন অ্যাগ্রো ফার্ম’। আটজন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন খামারে। প্রতি মাসে উৎপাদিত হয় প্রায় ৫০ টন কেঁচো সার।

সর্বশেষ খবর