দেশের বিশিষ্ট কৃষি অর্থনীতিবিদ, ইমেরিটাস অধ্যাপক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, একুশে পদকপ্রাপ্ত ড. মো. আবদুস সাত্তার মন্ডল ৭৪ বছর বয়সেও গ্রামের স্কুলে পাঠদান করেন। দেশের কৃষি বিভাগ নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার পরও প্রায়ই ছুটে আসছেন গ্রামের বাড়িতে। এসেই তাঁর এক সময়ের বিদ্যালয়ে ছুটে যান। সেখানে নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ক্লাস নেন। প্রাণখুলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশছেন। তিনি ক্লাস নেওয়ায় ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের কৃষ্ণারডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খুবই আনন্দিত বলে জানান। এলাকাবাসীও খুশি। ড. মো. আবদুস সাত্তার মন্ডলের জন্ম ১৯৪৯ সালে। তাঁর বাড়ি নগরকান্দা উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের উত্তর গোপীনাথপুর গ্রামে। স্কুলজীবনে তিনি পাশের গ্রামের কৃষ্ণারডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। তিনি ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন ২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত। তিনি সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ছিলেন প্রথমবার ২০০০ থেকে ২০০১ সাল, দ্বিতীয়বার ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত। সর্বশেষ ২০২২ সালে গবেষণায় গৌরবোজ্জ্বল অবদানের জন্য একুশে পদক লাভ করেন।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, স্যার (ড. সাত্তার মন্ডল) আমাদের ইংরেজি বিষয়টা খুবই সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দেন। এত বয়সেও উনার মধ্যে ক্লান্তি নেই। ইংরেজির জটিল বিষয়কে সহজভাবে বোঝান। আমরাও উনার মতো বড় মানুষ হওয়ার স্বপ্ন দেখি।
কৃষ্ণারডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাসুদ মোল্লা বলেন, সাত্তার মন্ডল স্যার মাঝে মাঝেই বাড়িতে আসেন। বাড়ি আসলেই বিদ্যালয়ে আসেন। নবম, দশম শ্রেণির ইংরেজি বিষয়ে পাঠদান করেন। বিদ্যালয়ের সার্বিক বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখেন। তাঁর মতো গুণী ব্যক্তিকে শ্রেণিকক্ষে পেয়ে শিক্ষার্থীরা আনন্দিত। স্যার ইতোমধ্যে তাঁর মা ও বাবার নামে বৃত্তি চালু করেছেন আমাদের বিদ্যালয়ে। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্ত্রীর নামে মেধাবৃত্তি চালু করেছেন। স্যার আমাদের বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। ড. আবদুস সাত্তার মন্ডল বলেন, আমি শেকড়ের টানে এখানে আসি। আমি শিক্ষার্থীদের ফাংশনাল ইংলিশ শেখাতে চাই। বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে আমারও ক্লাস নিতে ভালো লাগে। এ বিদ্যালয়ের নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভীতি দূর করতে চাই।