ধারাবাহিক তদারকি না থাকায় খুলনা নগরীতে গড়ে উঠছে নকশাবহির্ভূত বহুতল আবাসিক ভবন। দুই কাঠা জমিতে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে রাস্তার দিকে পাঁচ ফিট, দুই পাশে দুই ফিট সাত ইঞ্চি ও পেছনের দিকে তিন ফিট তিন ইঞ্চি জায়গা খালি রাখার নির্দেশ থাকলেও তা কেউ মানছে না। জমির আয়তন বৃদ্ধির পাশাপাশি ছেড়ে দেওয়া জমির পরিমাণও বাড়বে। কিন্তু নিজের জমি ছাড়িয়ে অনেক ক্ষেত্রে ভবনের সামনের অংশ ড্রেন, ফুটপাত, রাস্তার দিকে বাড়িয়ে করা হয়। কোনোটি চার তলা অনুমোদন নিয়ে পাঁচ তলা করা হয়েছে। পাশাপাশি দুই ভবনের মাঝেও নিয়ম অনুযায়ী খালি রাখা হয়নি।
ফলে গাদাগাদি করে গড়ে ওঠা এসব ভবনের বাসিন্দারা একদিকে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের সুবিধা বঞ্চিত হয়। অন্যদিকে নকশাবহির্ভূত স্থাপনায় সৌন্দর্যহানি অগ্নিঝুঁকি, পানি নিষ্কাশন ও পয়ঃনিষ্কাশন কাজে জটিলতা সৃষ্টি হয়। জানা যায়, খুলনায় স্থাপনা নির্মাণের নকশা অনুমোদন করে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির যথাযথ তদারকি না থাকায় সোনাডাঙ্গা, টুটপাড়া, লবণচরা, রূপসা, টুটপাড়া, বয়রা, শেখপাড়া, নবীনগর, বানিয়াখামার, গোবরচাকাসহ বিভিন্ন স্থানে নকশাবহির্ভূত ভবন গড়ে উঠছে। নাগরিক সংগঠন খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে গোপন যোগসাজশে অবৈধ ঝুঁকিপূর্ণ আবাসিক ভবন গড়ে উঠছে। এক্ষেত্রে নকশাবহির্ভূত ভবন নির্মাণ বন্ধে সংশ্লিষ্ট অন্য দপ্তরগুলোকেও সক্রিয় হতে হবে।
এদিকে কেডিএ আওতাধীন ৮২৪ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ২০ পরিদর্শক থাকার কথা থাকলেও কাজ চালানো হয় পাঁচ জনকে দিয়ে। ফলে একজন পরিদর্শককে প্রায় ১৬৪ বর্গকিলোমিটার এলাকার ভবনগুলো পরিদর্শন করতে হয়। তথ্য অনুযায়ী, কেডিএর অভিযানে চার মাসে ১২টি ভবনের নকশাবহির্ভূত বর্ধিত অংশ অপসারণ ও একটি চারতলা ভবনের বর্ধিত অংশ চিহ্নিত করে নিজ উদ্যোগে ভেঙে ফেলতে বলা হয়। কেডিএর অথরাইজড অফিসার জি এম মাসুদুর রহমান জানান, পরিকল্পিত নগরায়ণের জন্য অননুমোদিত ও অবৈধ নির্মাণ কাজের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে ।