পর পর দুই বছর উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রবাসী আয়ের প্রবাহে ধস নেমেছে। যা গত তিন দশকে দেখা যায়নি বলে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠক চলাকালে বৃহস্পতিবার অভিবাসন ও উন্নয়নবিষয়ক হালনাগাদ ওই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।—খবর বিডিনিউজ
বিশ্বব্যাংকের প্রাক্কলন অনুযায়ী, ২০১৬ সালে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ আগের বছরের চেয়ে ২ দশমিক ৪ শতাংশ কমে ৪২ হাজার ৯০০ কোটি ডলারে নেমেছে। ২০১৫ সালে এই দেশগুলোর রেমিটেন্স আয় ছিল ৪৪ হাজার কোটি ডলার।
ভূ-মধ্যসাগরীয় দেশগুলো ও রুশ ফেডারেশনে তেলের দরপতন ও দুর্বল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর প্রবাসী আয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। পাশাপাশি ইউরোপে দুর্বল প্রবৃদ্ধির কারণে আফ্রিকার উত্তর ও সাহারা মরু অঞ্চলের দেশগুলোর প্রবাসী আয় কমেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।ডলারের হিসাবে এই রেমিটেন্সের ধস আরও বাজে পরিস্থিতিতে যখন তা তুলনামূলক দুর্বল ইউরো, ব্রিটিশ পাউন্ড ও রুশ রুবলের সঙ্গে বিনিময় করা হয়। এর ফলে ব্যাপক প্রবাসী আয় অর্জনকারী দেশগুলোতে রেমিটেন্স প্রবাহে মারাত্মক পতন দেখা গেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় রেমিটেন্স গ্রহীতার অবস্থান ধরে রেখেও ভারতের প্রবাসী আয় গত বছর ৮ দশমিক ৯ শতাংশ কমে ৬ হাজার ২৭০ কোটি ডলারে নেমেছে। ২০১৫ সালে এই আয় ছিল ৬ হাজার ৮৯০ কোটি ডলার। অন্য শীর্ষ রেমিটেন্স গ্রহীতা দেশগুলোর মধ্যে গত বছর বাংলাদেশের প্রবাসী আয় ১১ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে। ২০১৭ সালে বাংলাদেশে রেমিটেন্স প্রবাহে ২ দশমিক ৪ শতাংশ হারে বাড়তে পারে বলে প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
রেমিটেন্স প্রবাহের ধারাবাহিক পতনে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি কয়েক দফায় ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে; কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুটি প্রতিনিধি দল মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় সরেজমিন তদন্তে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৬ সালে প্রবাসীরা ১ হাজার ৩৬১ কোটি ডলার রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছিলেন। ২০১৫ সালে এসেছিল ১ হাজার ৫৩২ কোটি ডলার। বাংলাদেশে প্রবাসী আয়ের নেতিবাচক প্রবণতা প্রথম দেখা দেয় ২০১৩ সালে। ওই বছরে প্রবাসীরা ১ হাজার ৩৮৩ কোটি ডলার পাঠান, যা ২০১২ সালের তুলনায় ২ দশমিক ৩৯ শতাংশ কম ছিল।