সিলেটের ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ সংগঠন সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ। প্রতি দুই বছর পরপর উৎসবমুখর পরিবেশে জেলার ব্যবসায়ীরা সরাসরি ব্যালটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করে থাকেন। চলতি বছর ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি তারা। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভোটাধিকার নিয়ে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন ব্যবসায়ীরা। তারা সমঝোতার গোপন কমিটি বাতিল করে প্রশাসকের মাধ্যমে সুষ্ঠু ভোটার তালিকার মাধ্যমে সিলেট চেম্বারের নির্বাচন দাবি করছেন। সিলেট মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্যকল্যাণ পরিষদের সভাপতি আবদুর রহমান রিপন বলেন, প্রতি দুই বছর পরপর ব্যবসায়ীরা ভোটের মাধ্যমে চেম্বারে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করেন। কিন্তু বর্তমান পরিষদ নির্বাচন ছাড়াই গোপনে কমিটি করেছেন। সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুজিবুর রহমান মিন্টু বলেন, চেম্বারের নির্বাচন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রায় একই সময়ে ছিল। তাই সমঝোতার মাধ্যমে সব দলের মতাদর্শীদের নিয়ে নির্বাচন ছাড়াই কমিটি হয়েছিল। যে পাঁচ পরিচালক পদত্যাগ করেছেন তারাও এই প্রক্রিয়ার মধ্যে ছিলেন। তবে এখনো সুযোগ আছে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের। চেম্বার ভবন ঘেরাও আর জোরজবরদস্তি ব্যবসায়ী-সুলভ আচরণ নয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট চেম্বারের ২০২৪-২৬ মেয়াদের কমিটি গঠন করা হয় চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি। নির্বাচিত পর্ষদের দাবি- ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২০২৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। তিন ক্যাটাগরির ২৩ পদে একক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা পড়ায় সবাইকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তবে সাধারণ ব্যবসায়ীরা বলেন- গোপনে কমিটি করেছেন নেতারা। সমঝোতা করে তারা পদ বাগিয়ে নিয়েছেন। নির্বাচিত নেতারা তফসিল ঘোষণার দাবি করলেও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ তারা এ ব্যাপারে কিছুই জানতেন না। প্রতিবার তফসিল স্থানীয় পত্রিকাগুলোতে ফলাও করে প্রচার করা হলেও তা করা হয়নি। কিন্তু চেম্বারে তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা জড়িত থাকায় সাধারণ ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ খুব জোরালো হয়নি।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ব্যবসায়ীরা সিলেট চেম্বারের ‘গোপন কমিটি’ বাতিল করে ভোটের মাধ্যমে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি নির্বাচনের দাবি তোলেন। এ নিয়ে তারা চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদের সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগ করেন। কিন্তু তিনি তা আমলে নেননি। এরপর থেকে কমিটি বাতিল দাবিতে ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন, মতবিনিময় ও স্মারকলিপি প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন। এই অবস্থায় চেম্বার সভাপতি তাহমিন আহমদ অসুস্থতা দেখিয়ে দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করে পরিচালক মুজিবুর রহমান মিন্টুকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেন। পদত্যাগ করেন চেম্বারের সিনিয়র সহসভাপতি ও সহসভাপতিসহ পাঁচ পরিচালক। এদিকে সাধারণ ব্যবসায়ীরা গত ১১ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় কমিশনার বরাবর চেম্বারের কমিটি বাতিল ও প্রশাসক নিয়োগের দাবিতে স্মারকলিপি দেন।