বুধবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
ইতিহাস

আইয়ুব ইয়াহিয়া

হুসেন হাক্কানী জেনারেল জিয়াউল হকের দুই পূর্বসূরি জেনারেল আইয়ুব খান এবং জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে তার যে পার্থক্য টেনেছেন তা বাস্তব সম্মত। আইয়ুব খান তার অবৈধ ক্ষমতা দখল এবং স্বৈরাচারী শাসন টিকিয়ে রাখতে ইসলামকে ঢাল হিসেবে  ব্যবহার করলেও তার ব্যক্তিগত জীবনে ধর্মীয় মূল্যবোধের কোনো ছায়াও ছিল না। পাকিস্তানকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করে তিনি ধর্মভীরু দেশবাসীর বাহবা পেতে চেয়েছিলেন। গণতন্ত্রবাদীদের ঘায়েল করতে এবং তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (আজকের বাংলাদেশ) ও বেলুচিস্তান এবং উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের জনগণের স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রামকে ঠেকাতে তিনি ইসলামকে ব্যক্তি ও কোটারি স্বার্থ উদ্ধারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন। ব্যক্তিগত জীবনে আইয়ুব ছিলেন মদ্যপ ও লম্পট। লন্ডনের পত্রিকায় আইয়ুব খানের সঙ্গে একজন ব্রিটিশ বরবণিতার যে ছবি ছাপা হয় তা দেখলে লজ্জায় যে কোনো পাকিস্তানির মাথা হেঁট হওয়ার কথা।

জেনারেল ইয়াহিয়া খান নিজেকে ইসলাম রক্ষার সোলএজেন্ট হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করলেও তিনি ছিলেন আর এক কাঠি উপরে। সন্ধ্যার পর এই পাকিস্তানি স্বৈরশাসক ডুবে থাকতেন মদে। এতটাই মাতাল ছিলেন তিনি বাধ্য হয়ে তার এক ঘনিষ্ঠ জেনারেল অধীনস্থদের জানিয়ে দেন প্রেসিডেন্ট রাতের বেলায় অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় কোনো নির্দেশ দিলে সেটি যেন দিনের বেলায় যাচাই করে কার্যকর করা হয়।

জেনারেল জিয়াউল হক এদিক থেকে ছিলেন ব্যক্তি জীবনে ধর্মীয় অনুশাসনের অনুসারী। ক্ষমতায় এসে তিনি পাকিস্তানকে পুরোদস্তুর ইসলামীকরণে উঠেপড়ে লাগেন। জুলফিকার আলী ভুট্টো জেনারেল জিয়াকে সিনিয়র অনেক জেনারেলকে ডিঙিয়ে সেনা প্রধান পদে নিযুক্ত হন। কিন্তু তাকে শুধু ক্ষমতাচ্যুতই নয়, ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিলেন জিয়াউল হক। ব্যক্তি জীবনে ভুট্টো ধর্মীয় অনুশাসনের ধারেকাছে না থাকায় তার প্রতি সীমাহীন বিদ্বেষ পোষণ করতেন জেনারেল জিয়াউল হক।  মনে করা হয় ভুট্টোকে ফাঁসি দেওয়ার পেছনে সে ক্ষোভ নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর