শনিবার, ১১ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

শাবনূরের ভাবনা

আলাউদ্দীন মাজিদ

শাবনূরের ভাবনা

‘চলচ্চিত্রের বর্তমান দৈন্যদশা দেখলে মনটা গুমড়ে কেঁদে উঠে। নব্বই দশক পর্যন্ত আমাদের এই শিল্পের কী যে রমরমা অবস্থা ছিল তা এখন ভাবাই যায় না। এখন কোনটি সিনেমা আর কোনটি নাটক নির্মাণ হচ্ছে তা বোঝা দায়। খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকাররা এখন আর নির্মাণে নেই। আগে অনেক শিল্পী ছিলেন। তাদের ছবি রীতিমতো প্রতিযোগিতা দিয়ে ব্যবসা সফল হতো। এখন তেমন শিল্পী কোথায়? সিনেমাহল উদ্বেগজনক হারে কমছে। নামি-দামি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এভাবে কী একদিন দেশের সবচেয়ে বড় এই গণমাধ্যমটি হারিয়ে যাবে?’ এমন ক্ষোভ আর প্রশ্ন অভিনেত্রী শাবনূরের।

বেশ কিছুদিন অস্ট্রেলিয়ায় কাটানোর পর গত মাসে ঢাকায় ফেরেন এই অভিনেত্রী। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, চলচ্চিত্র শিল্পকে নিয়ে তার নানা দুশ্চিন্তার কথা। ২০১৩ সালে সর্বশেষ মুক্তি পায় শাবনূর অভিনীত ছবি ‘কিছু আশা কিছু ভালোবাসা’। এরপর ব্যক্তিগত কারণ ও চলচ্চিত্রের মন্দাবস্থার কারণে এই শিল্প থেকে দূরে সরে আছেন তিনি।

আবার কখন নিয়মিত ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবেন? এমন প্রশ্নে দীর্ঘশ্বাস ফেলে শাবনূর বলেন, নিয়মিত অভিনয় করে তো যেতেই চাই। কিন্তু, মানসম্মত গল্প, নির্মাতা আর ছবি কোথায়? ছবি নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন বহুদিন আগে। এর খবর কী? দৃঢ় প্রত্যয়ী কণ্ঠে শাবনূর বলেন, এখনো চাই নির্মাণে আসতে। কিন্তু উপযুক্ত পরিবেশ তো দরকার। সব ঠিকঠাক হলে অবশ্যই নির্মাণ করব। গল্প থেকে শুরু করে সবই তো চূড়ান্ত করে রেখেছি। হয়তো চলতি বছরেই কাজ শুরু করব। ঘন ঘন অস্ট্রেলিয়া চলে যাওয়ার কারণে অনেক ছবির কাজ অসমাপ্ত রয়ে গেছে এমন অভিযোগ অনেক নির্মাতার। এমন প্রশ্নে শাবনূর বলেন, আসলে যে কয়টি ছবির কাজ শেষ হচ্ছে না সেগুলো তো প্রযোজকের সমস্যার কারণেই হচ্ছে না। যেমন ‘স্বপ্নের বিদেশ’, ‘অবুঝ ভালোবাসা’ ইত্যাদি। গত বছর তো প্রয়াত এম এম সরকারের একটি অসমাপ্ত ছবির কাজ শেষ করে দিলাম। এখানে আমার দোষ কোথায় বলুন? আপনি যেহেতু অস্ট্রেলিয়ারও নাগরিক, তাই আবারও সহসা সেখানে ফিরে যেতে হচ্ছে তাই না? কিছুটা অন্য মনস্ক হয়ে শাবনূর বলেন, ‘এবার বেশ কিছুদিন দেশে থেকে তারপর যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মা খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তা ছাড়া বাবাও খুব অসুস্থ। দুজনের চিকিৎসার জন্য হয়তো কয়েকদিনের মধ্যে আবারও অস্ট্রেলিয়ায় যেতে হবে। তা ছাড়া আমার থাইরয়েডের সমস্যা রয়েছে। এর চিকিৎসাও চলছে সেখানে। আর পরিবারের সবাই তো সেখানেই স্যাটেল।’ তাহলে তো আর নিয়মিত অভিনয় করা হচ্ছে না? এমন প্রশ্নে মৃদু প্রতিবাদের সুরে শাবনূরের কথা হলো—চলচ্চিত্র শিল্পকে তো একটানা বিশাল একটা সময় দিয়েছি। আর কত? এখন বেছে বেছে বছরে দুএকটি ছবি করতে চাই। এবং তা হবে সত্যিকারের মানের ছবি। যেমনটা করেন বলিউডে আমির খান, কাজল বা শাহরুখ খান। সবশেষে শাবনূরের সাফ কথা হলো— চলচ্চিত্রের অবস্থা যতই মন্দ হোক, এ জগেক কখনো ছেড়ে যাব না। কারণ চলচ্চিত্রের জন্যই আজ আমি শাবনূর। আমার অর্থ-বিত্ত-খ্যাতি সবই চলচ্চিত্রের কল্যাণেই হয়েছে। আমরা যদি আবার নিবেদিতপ্রাণ হয়ে এই শিল্পের কল্যাণে একতাবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে পারি, তাহলে আমাদের চলচ্চিত্রের সুদিন ফিরবেই।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর