বুধবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

গাড়ি কাহিনী

সাইফ ইমন

গাড়ি কাহিনী

শিল্পীর চোখে ভবিষ্যতের ‘ফ্লাইং কার’ বা উড়ন্ত গাড়ি। আশা করা যায় ২০৫০ সালের মধ্যেই দেখা যাবে এমন গাড়ি।

রোবট গাড়ি

রোবট গাড়ির নাম শুনলেই মনে পড়ে যায় হলিউডের জনপ্রিয় সিনেমা ‘ট্রান্সফরমার’ মুভিটির কথা। মুভিতে দেখা যায় দ্রুত বেগে ছুটে চলা বিএমডব্লিউ হঠাৎ সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে রোবটের আকৃতি নেয়। কিন্তু বাস্তবে কি এটা সম্ভব! হ্যাঁ এই অসম্ভবকেই সম্ভব করেছে তুরস্কের গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা লেটভিশন। গাড়িটির নাম রাখা হয়েছে লেট্রন্স। সম্পূর্ণ রিমোট কন্ট্রোলে চালিত এই গাড়ির অংশগুলো উলটপালট হয়ে রোবটের আকার নিতে পারবে। বিজমাত, আরগন, ওলফ্রাম মডেলের গাড়ি তৈরি করেছে সংস্থাটি।

দ্রুতগতির গাড়ি

১৮৮৮ কেজি ওজনের বুগাট্টি ভেয়রন সুপার স্পোর্টকেই পৃথিবীর অন্যতম দ্রুততম গাড়ি বলে মানা হয়। ২০১০ সালে যখন প্রথম বাজারে আসে তখন এটি ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগামী লিগ্যাল স্ট্রিট কার। এই গাড়িটি সমতল রাস্তায় মাত্র ২.৪ সেকেন্ডের স্পিডে ৬০ মাইলে ছুটতে পারে। পৃথিবীর দ্রুততম এই গাড়ি প্রতি ঘণ্টায় ২৬৭ মাইল অতিক্রম করতে পারে। এর ৮ লিটার ডব্লিউ-১৬ ইঞ্জিনটির কার্যক্ষমতা ১২০০ হর্সপাওয়ার। গাড়িটির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১৯ কোটি টাকা। দ্রুততম বিষয়ের দিক দিয়ে রেকর্ড করে এগিয়ে রয়েছে আরও একটি গাড়ি। ঘণ্টায় ১২২৮ কিলোমিটার চলতে সক্ষম এই গাড়িটির নাম থ্রাস্ট-এসএসসি। নামে গাড়ি হলেও দেখতে অনেকটা জেটের মতোই এটা। এর ইঞ্জিন এতটাই শক্তিশালী যে ঠিকঠাক যানের সঙ্গে লাগিয়ে দিতে পারলে ৩,২০০ কিলোমিটারে এক রেঞ্জে ১০০ মানুষকে টানা বহন করতে সক্ষম।

হেন্নেস্যে ভেনম জিটি পৃথিবীর অন্যতম দ্রুততম গাড়ি। গাড়িটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪৩৫ কিলোমিটার। গাড়িটি ০ থেকে ৬০ কিলোমিটার গতি তুলতে সময় নেয় মাত্র ২.৫ সেকেন্ড। গাড়িটির এই দানবীয় গতির কারণ এর ১২৪৪ হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন।

 

ব্যয়বহুল গাড়ি

প্রতিবছরই বাজারে শ্রেষ্ঠত্বের জায়গা নিয়ে লড়াইয়ে নামে নামিদামি গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিগুলো। গাড়ির ব্র্যান্ড ভ্যালু, মডেল, সুযোগ-সুবিধা ও আরাম আয়েশের ওপর নির্ভর করে দাম নির্ধারিত হয়। এসব দিক বিবেচনা করে বিশ্বের সবচেয়ে দামি গাড়িগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ল্যাম্বোরগিনি ভেনেনো। মূল্য ৪৫ লাখ ডলার।

গাড়িটি মাত্র ২.৮ সেকেন্ডে ০ থেকে ঘণ্টায় ৬০ মাইল গতিতে ছুটতে পারে। সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২২১ মাইল। বিস্ময়কর তথ্য হচ্ছে, প্রতিবছর মাত্র তিনটি ল্যাম্বোরগিনি ভেনেনো বাজারে ছাড়া হয়। ব্যয়বহুল গাড়ির তালিকায় এরপরই আসে ৭৫০ হর্সপাওয়ারের একটি ৬-টুইন টার্বো ইঞ্জিনসমৃদ্ধ লাইকান হাইপার স্পোর্ট। গাড়িটির দাম ৩৪ লাখ ডলার।

মাত্র ২.৮ সেকেন্ডে ০ থেকে ঘণ্টায় ৬০ মাইল গতি তুলতে সক্ষম গাড়িটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২৫৪ মাইল। বিশ্বের অন্যতম দ্রুতগতির গাড়ি বুগাটি ভেয়রন সুপার স্পোর্টসও আছে বিশ্বের ব্যয়বহুল গাড়ির তালিকায়। মাত্র আড়াই সেকেন্ডে ঘণ্টায় ৬০ মাইল গতিবেগ তুলতে সক্ষম এ গাড়ির দাম ২৪ লাখ ডলার। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৬৭ মাইল বেগে ছুটতে পারে এটি। তাই বুগাটি ভেয়রনের সঙ্গে একটু বুঝেশুনে পাল্লায় নামা উচিত।

বিশ্বের ব্যয়বহুল গাড়ির তালিকায় আরও কিছু গাড়ি রয়েছে যেমন পাগানি  জোন্ডা সিংক রোডস্টার (১৮ লাখ ৫০ হাজার ডলার), জেনোভো এসটি ওয়ান (১২ লাখ ৫০ হাজার ডলার), কোয়েনিগসেগ আগেরা আর (১৬ লাখ ডলার), হেনেসে ভেনম জিটি স্পাইডার (১১ লাখ ডলার) ইত্যাদি।

 

বিদ্যুতে চলে যে গাড়ি

বৈদ্যুতিক গাড়ির নাম শুনলেই ধারণা করা যায় যে এটি বিদ্যুত্চালিত গাড়ি যা পরিবেশবান্ধব। এ গাড়িগুলো ব্যাটারিতে মজুদ করা শক্তি ব্যবহার করে চলে।   বৈদ্যুতিক গাড়ির শুরুটা হয়েছিল ১৯ শতকের দিকে। এ গাড়িগুলোর অসুবিধা হলো ব্যাটারিতে যতক্ষণ চার্জ থাকবে ততক্ষণই এটি চলতে পারবে। কিন্তু ২০ শতকের গোড়ার দিকে ইঞ্জিনচালিত গাড়ির ব্যাপক প্রসারের ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রচলন কমতে শুরু করে। মূলত ব্যাটারির অপ্রতুলতার কারণেই বৈদ্যুতিক গাড়িগুলোর ব্যবহার কমে যায়। ১৯৭০ ও ১৯৮০-র দশকে জ্বালানি সংকট প্রকট হয়ে ওঠে। এর ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রয়োজনীয়তা নতুন করে অনুভূত হয়।

তখন থেকেই বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রচলন আবার শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৮ সালে তৈরি হয় টেসলা মোটরস রোডস্টার এবং নিশান লিফের মতো আকর্ষণীয় মডেলের সম্পূর্ণ বিদ্যুিনর্ভর গাড়ি। এরপর থেকেই বৈদ্যুতিক গাড়িগুলো আবার জনপ্রিয় হতে শুরু করে। এগুলো মূলত রিচার্জেবল লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারিতে চলে।

আবার হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল গাড়িগুলোও বৈদ্যুতিক মোটরের সাহায্যে চলে। তবে পার্থক্যটা হলো ফুয়েল সেলের সাহায্যে মজুদ জ্বালানি থেকে রূপান্তরিত জ্বালানি আলাদা করা যায়। কিন্তু এগুলো ব্যাটারির শক্তি ব্যবহার করার পরিবর্তে একটি জ্বালানি কোষের সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে।  এ ক্ষেত্রে সাধারণত বাতাসের অক্সিজেন এবং গাড়িতে মজুদ হাইড্রোজেন গ্যাস ব্যবহৃত হয়। তবে ব্যাটারি ও ফুয়েল সেলের মধ্যে পার্থক্য কম। ফুয়েল সেল গাড়ির সহায়ক হিসেবে বেশ কয়েক ধরনের জ্বালানি ব্যবহার করা যায়। এসব ক্ষেত্রে জ্বালানি হিসেবে হাইড্রোজেনের ব্যবহার বেশি। হুন্দাই টাকসন এবং টয়োটা মিরাই গাড়িগুলো ফুয়েল সেলের সাহায্যে চলে। বৈদ্যুতিক গাড়িগুলো কোনো ধরনের জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার না করায় সাধারণ ইঞ্জিনচালিত গাড়ির ভালো বিকল্প হিসেবে প্রশংসিত। তাই ব্যাটারিচালিত ও ফুয়েল সেলনির্ভর বৈদ্যুতিক গাড়ি দ্রুতই সমৃদ্ধ হচ্ছে।

 

ভবিষ্যতের গাড়ি হবে জ্বালানি সাশ্রয়ী

কেমন হবে ভবিষ্যতের গাড়ি? এ নিয়ে গাড়িপ্রেমী, উৎপাদনকারী  প্রতিষ্ঠান এবং অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। বিভিন্ন সায়েন্স ফিকশন সিনেমা থেকে ভবিষ্যতের গাড়ি সম্পর্কে একটা সম্যক ধারণা পাওয়া যায়। রাশিয়ার বিখ্যাত লেখক আইজেক অসিমভ রচিত সাই-ফাই উপন্যাসগুলোতে লেখক তার কল্পনার ডানা মেলে ভবিষ্যতের গাড়ির চমৎকার বর্ণনা দিয়ে গেছেন। বিখ্যাত চিত্রকর লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি তার ক্যানভাসে যেমন উড়োজাহাজের মডেল এঁকেছিলেন তেমনি বিভিন্ন সাই-ফাই লেখাগুলো থেকে ভবিষ্যতের গাড়ি কল্পনা করে নিতেই পারি। যেহেতু কোথায় চলবে তার ওপর নির্ভর করে যানবাহনের প্রকারে ভিন্নতা আসে তাই বলা যায় ভবিষ্যতের পৃথিবীর রাস্তাঘাট কেমন হবে মূলত তার ওপর নির্ভর করেই ভবিষ্যতের গাড়ি তৈরি হবে। তবে এ কথা নিশ্চতভাবেই বলা যায়, ভবিষ্যতের গাড়ি হবে জীবাশ্ম জ্বালানিমুক্ত। এক্ষেত্রে জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে বিদ্যুৎ ও হাইড্রোজেন জ্বালানি ব্যবহার চলে আসবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ভবিষ্যতের গাড়ি হবে আরও বেশি গতিশীল এবং শক্তপোক্ত। গাড়িতে থাকবে নিত্যনতুন প্রযুক্তি। রেসিং কার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ডেল্টা উইং কোম্পানি ভবিষ্যতের উপযোগী দুটি গাড়ির নকশা এঁকেছে। এ গাড়ি দুটিতে তীর আকৃতির নকশা প্রাধান্য পেয়েছে। স্পোর্টস কারের মতো নকশা তৈরির পরপরই ডেল্টা উইং নকশা দুটির প্যাটেন্ট করিয়ে রেখেছে। গাড়ি দুটির ডিজাইনে গতি প্রাধান্য পেয়েছে, পাশাপাশি অ্যারোডায়নামিক্স প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।

 

৪ কোটি টাকার সোনার গাড়ি

সোনার গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান নিশান। প্রতিষ্ঠানটি সোনা দিয়ে সম্পূর্ণ মোড়ানো একটি গাড়ি তৈরি করেছে সম্প্রতি। অদ্ভুত ডিজাইনের এই গাড়িটির নামও খুবই অদ্ভুত— ‘গডজিলা’। সোনা দিয়ে মোড়ানো এই গাড়ির দামও কিন্তু কম অদ্ভুত নয়, শুনলে চমকে উঠতে বাধ্য হবেন। মাত্র ১০ লাখ টাকা খরচ করে আপনিও ঘুরে বেড়াতে পারবেন সোনার গাড়িতে। তবে এটিই প্রথম সোনার গাড়ি নয়, ১৯৮৮ সালে লিঙ্কন শহরের লিমোউসিন সড়কে দেখা গিয়েছিল প্রথম সোনার গাড়ি। সোনার প্রলেপের ওপর নির্মিত গাড়িটিকেই পৃথিবীর প্রথম সোনায় মোড়া গাড়ি বলে ধারণা করা হয়। গোটা বিশ্বে আলোড়ন তুলেছিল সেই সোনার তৈরি গাড়ি। গাড়ির প্রতিটি অংশ ছিল সোনার কয়েনে আচ্ছাদিত। আর এর  ব্রেক তৈরি করা হয় নায়াগ্রা জলপ্রপাতের কেন বারকিট দিয়ে।

বর্তমানে গাড়িটি মেক্সিকোতে আছে। রিপ্লির সংগ্রহের অংশ হিসেবে জাদুঘরে সংরক্ষিত করা হয়েছে।

মজার ব্যাপার হলো মাত্র অল্প কিছুদিন আগেই আবারও সোনার গাড়ি দেখা গেছে। তবে এবার আর লিঙ্কন শহরে নয়, খোদ লন্ডনেই দেখা গেছে সোনার গাড়ি। শুনলে চমকে উঠবেন যে

তাও একটি নয় দুটি নয় মোট পাঁচ পাঁচটি সোনার গাড়ি ঘুরতে দেখা গেছে শহরের রাজপথজুড়ে। সবগুলো গাড়িই সোনা দিয়ে মোড়ানো। এমনকি গাড়িগুলোর স্টিয়ারিংও সোনার তৈরি। এই দৃশ্য দেখে তো সবার চোখ কপালে! পুরো লন্ডন শহরে তখন একটাই প্রশ্ন— কে এই সোনার গাড়িগুলোর মালিক! অবশেষে জানা যায় এই গাড়িগুলোর মালিক ২৩ বছর বয়সী এক সৌদি যুবক। যুবকের নাম তুর্কি বিন আবদুল্লাহ। তিনি জানান, গাড়িগুলো কেনার পর তা মডিফাই করে সোনার প্রলেপ দেওয়া হয়। এসব গাড়ির মধ্যে রয়েছে ৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা মূল্যের অফ রোডার মার্সিডিস জি ৬৩, ২ কোটি টাকার বেন্টলি ফ্লাইং স্পার, ৪ কোটি টাকার একটি রোলস রয়েলস ও চার কোটি টাকা মূল্যের ল্যাম্বোরগিনি।

 

গুলি-বোমা-মিসাইল ঠেকায় ওবামার গাড়ি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা চলাচল করেন একটি কালো ক্যাডিলাক গাড়িতে। নাম ‘দ্য বিস্ট’। এটি তার সরকারি যান। পদাধিকারবলে বর্তমান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ব্যবহার করছেন গাড়িটি। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র তৈরি এই গাড়িটি শুধু বুলেটপ্রুফ বা গুলি প্রতিরোধই নয় বরং মিসাইল কিংবা গ্রেনেডের আঘাতেও গাড়িটির আরোহীর কোনো ক্ষতি হবে না। শত্রুর হামলা মোকাবিলায় সব রকমের প্রতিরোধ ব্যবস্থাই রয়েছে এই গাড়িতে। এ ছাড়াও রয়েছে প্রতিপক্ষের পাল্টা জবাব দেওয়ার মতো আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা। গাড়িটির কাচ এত পুরু যে রকেটচালিত গ্রেনেডও ভেদ করতে পারবে না। এর দরজাগুলো ১০ ইঞ্চি পুরু। এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ মাইল। গাড়ির চাকাগুলো এমনভাবে তৈরি যে, বোমায় এর টায়ার ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কোনো রকম সমস্যা ছাড়াই সমান গতিতে চলতে পারবে। ৮ টন ওজনের গাড়িটির দৈর্ঘ্য ১৮ ফুট আর উচ্চতা ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি। এতে আরও আছে বিশেষ অক্সিজেন ট্যাংকার। এ ছাড়াও রাতে দেখার জন্য রয়েছে নাইটভিশন ক্যামেরা, শত্রু মোকাবিলার জন্য শটগানের মতো আগ্নেয়াস্ত্র। রয়েছে আরোহীদের কেউ অসুস্থ হলে তার জন্য দরকারি রক্তের সরবরাহ ও উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা। গাড়িটির চালক একজন মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র সুপ্রশিক্ষিত এজেন্ট।

 

যে গাড়ি পানি দিয়ে চলে

তেল ছাড়া চলবে গাড়ি। তাও আবার পানি দিয়ে! এমনই এক গাড়ি আবিষ্কার করে বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছেন ভারতের মধ্যপ্রদেশের রাইজ মুহাম্মদ মাকরানি।

তার উদ্ভাবিত গাড়িটি চলবে পানি ও ক্যালসিয়াম কার্বাইডের মিশ্রণে। ক্যালসিয়াম কার্বাইড ও পানি একসঙ্গে মেশানো হলে অ্যাসিটিলিন গ্যাস উত্পন্ন হয়। যা দিয়েই চলে এই অভিনব গাড়িটি। এতে জ্বালানি খরচ  যেমন কমবে তেমন পরিবেশবান্ধবও। এই গাড়িটি তৈরি করতে মাকরানির লেগেছে মাত্র ৬ মাস। মাত্র টুয়েলভ পাস রাইজ মাকরানি যে অসাধ্য সাধন করেছেন তাতে অনেক মানুষ যে উপকৃত হবে তা বলাই বাহুল্য।

 

 

সবচেয়ে সস্তা গাড়ি

বিশ্বের সবচেয়ে কম দামি গাড়িগুলোর মধ্যে দেখতে আকর্ষণীয় হলো টাটা ন্যানো। মাত্র দুই হাজার ডলার দিয়েই যে কেউ কিনতে পারবে এ গাড়ি। ৬২৩ সিসির গাড়িটি প্রতি লিটারে প্রায় ২৫ কিলোমিটার যেতে পারে। এর আছে বিশেষ সেফটি বক্স। ছোট আকৃতির এই গাড়িতে পুরো পরিবার নিয়ে ঘুরে বেড়ানো সম্ভব। মূলত গাড়িটির একাধিক ভার্সন রয়েছে। আকারে ছোট হওয়ায় যে কোনো অলিগলিতেও গাড়িটি স্বাচ্ছন্দ্যে চালানো সম্ভব। কম দামি গাড়িগুলোর মধ্যে আরও একটি গাড়ি হলো মারতি ৮০০। এই গাড়ির মূল্য ৫ হাজার ২০০ ডলার।

 

গাড়িতেই বেডরুম, ফায়ারপ্লেস, সিনেমা হল

বিশ্বের সর্বাধিক বিলাসবহুল গাড়িটি দুই তলাবিশিষ্ট। নাম ইলেমেন্ট পালাজ্জো। এর রয়েছে সর্বাধুনিক আকর্ষণীয় কিছু  বৈশিষ্ট্য। গাড়িটির দাম ৩ মিলিয়ন ডলার। এর ভিতর আপনি নিশ্চিন্তে টেলিভিশন দেখতে দেখতে রাত-যাপনও করতে পারবেন। কারণ গাড়িটিতে রয়েছে বিশাল আকৃতির একটি বেডরুম ও ৪০ ইঞ্চি এইচডি টিভি। উপরের তলায় রয়েছে বাথরুম। যেখানে আপনি গোসলও সেরে নিতে পারবেন। অবকাশ যাপনের জন্য এর ছাদে আছে একটি চত্বর। চারদিকে ঝকঝকে পরিবেশ। বাহারি রঙে সজ্জিত এর ভিতরের পরিবেশ। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, এর ভিতরে রয়েছে ফায়ারপ্লেস অর্থাৎ আগুন ধরানোর জায়গা। শীতের মৌসুমে এই ফায়ারপ্লেসে মাধ্যমে শরীর গরম করে নিতে পারবেন। এ ছাড়া গাড়িটির ছাদে রয়েছে ৪০ ফুটের একটি ককটেলবার। আর গাড়িটির নিচতলা সাজানো হয়েছে মূল্যবান সব পাথর দিয়ে। এর ভিতরে রান্না করার জন্য রয়েছে একটি সম্পূর্ণ রান্না ঘর। যেখানে আপনি যে কোনো রান্নাই সেরে ফেলতে পারবেন। মূল কথা, গাড়িটির ভিতরে ঢুকলেই পাল্টে যাবে ধারণা। পরিবেশ পুরোটাই ডিজাইন করা হয়েছে এমনভাবে যে ভিতরে যে কেউ প্রবেশ করলে ভাবতে বাধ্য হবে সে কোনো প্রাসাদের ভিতরে প্রবেশ করেছে। বিলাসবহুল এ গাড়িটির নকশা করেছেন লুইগি কোলানি। তিনি একজন জার্মানি ডিজাইনার। গাড়িটির যোগাযোগ ব্যবস্থাও অত্যন্ত চমৎকার। গাড়িটি নিয়ে আপনি যেখানেই যান না কেন সব সময়ই পাবেন ইন্টারনেটসহ প্রযুক্তির সব সুযোগ-সুবিধা। মজার ব্যাপার হলো, গাড়িটির ডেক প্রায় ৪৩০ ফুট পর্যন্ত প্রশস্ত করা যায়। ফলে আপনি ইচ্ছা হলেই সেখানে শুয়ে সান বাথ নিতে পারবেন। আর দুতলায় ওঠার জন্য গাড়ির ভিতরে রয়েছে একটি আকর্ষণীয় চলন্ত সিঁড়ি। এ ছাড়াও বেডরুমকে যখন-তখন সিনেমা হল হিসেবে ব্যবহার করা যায় অনায়াসেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর