ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম সরকার সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্ঠিয়ায় উপাচার্য হিসেবে যোগ দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন আমাদের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি- আকতারুজ্জামান
স্যার, ক্যাম্পাসের বর্তমান পরিস্থিতি কেমন?
গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষে ক্যাম্পাস খুলেছে। বিভিন্ন বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রয়েছে। শিক্ষার্থীরা আন্তরিকভাবে পড়াশুনায় মন দিয়েছে।
নিয়োগ সম্পর্কিত জটিলতায় বেশ কয়েক মাস ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ছিল। শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে কি ব্যবস্থা নিয়েছেন?
আমি যোগদান করে এ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। শিক্ষকদের অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়ার অনুরোধ করেছি। আশা করছি, এতে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে। প্রয়োজনে বিভাগীয় শিক্ষকরা শুক্রবারও পরীক্ষা নিবেন।
আমাদের ক্যাম্পাসে কয়েকটি বিভাগে সেশনজট চরম আকার ধারণ করছে। আল ফিকহ বিভাগে ১০ বছরেও কোনো ব্যাচ স্নাতকোত্তর শেষ করতে পারেনি। তাদের পরীক্ষার ফল দীর্ঘদিন ধরে আটকে রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে কিছু বলবেন?
এটা সত্যি যে, কয়েকটি বিভাগে সেশনজট চরম আকার ধারণ করেছে। এসব বিভাগের শিক্ষকরাই নিয়মিত নন। এসব বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বিভাগীয় সভাপতিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনগুলোর মারমুখী আচরণের কারণেই ক্যাম্পাসের অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতি সম্পর্কে কিছু বলুন?
ছাত্র রাজনীতি যেন শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্ন করতে না পারে এদিকে খেয়াল রেখে ক্যাম্পাস এলাকায় রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক সব মিছিল-মিটিং, সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আমাদের ছাত্রনেতারাও সহনশীল ভূমিকা রেখেছে। আমরা শিক্ষার জন্য সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করছি।
শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কি উদ্যোগ নিয়েছে?
শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য আমরা ইতোমধ্যে কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। সম্প্রতি শেখ হাসিনা হল নামে নতুন একটি ছাত্রীনিবাস নির্মাণের কাজ চলছে। নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে এখানে আনুমানিক ৩৫০ ছাত্রীর আবাসন হবে। বিভিন্ন জটিলতায় শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল নির্মাণ কাজ সহজ হয়ে ওঠে না। তবে আমাদের ক্যাম্পাসে আরও কয়েকটি আবাসিক হল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।
অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় এ ক্যাম্পাসে প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষা দেরিতে হয়। ভর্তি পরীক্ষা এগিয়ে আনার কোনো পরিকল্পনা আছে কি?
একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণে গত বছর সময় মতো এখানে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। আশাকরি এ বছর সময় মতো আমরা ভর্তি পরীক্ষা নিতে পারব। এ জন্য শিক্ষক, ছাত্র, ছাত্রসংগঠন, সাংবাদিক সবারই সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরা ভর্তি সমস্যা দূর করে শিক্ষার্থীদের আরও সেবা দিতে চাই।
স্যার, আপনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে কোন পর্যায়ে দেখতে চান।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা থেকে দেশে উচ্চ শিক্ষা প্রসারে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। সবার সহযোগিতা নিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন একটি আধুনিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করতে চাই।