কখন হবে, কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগে আদৌ হবে কিনা, এসব নানা প্রশ্নের মধ্যে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। অবশেষে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিন-তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ৮ ডিসেম্বর সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে ব্যাপকভাবে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে। আসবেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতারাও। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ৮ ডিসেম্বর সম্মেলনের আগেই জেলার ৮ উপজেলার মধ্যে বোয়ালখালী উপজেলায় ১৫ নভেম্বর সম্মেলন ও আনোয়ারা-কর্ণফূলী উপজেলার সম্মেলনের বিষয়ে আগামীকাল শুক্রবার দিন-তারিখ ঘোষণা করা হবে। বাকি চার উপজেলা সাতকানিয়া, পটিয়া, লোহাগাড়া এবং চন্দনাইশে সম্মেলন হলেও বর্তমানে তিন বছর পার করেছে। অন্যদিকে, জেলার বাঁশখালী উপজেলার সম্মেলন ১৯৯৬ সালে হলেও এই উপজেলার সম্মেলন নিয়ে নানান ধরনের কূটকৌশল করছেন জেলার নানা কারণে বির্তকিত চিহ্নিত শীর্ষ নেতা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা-কর্মী বলেন, অবশেষে ৮ ডিসেম্বর দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। এই খবরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে যেমনি উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে, ঠিক তেমনি জেলার দায়িত্বশীল শীর্ষ নেতার আচরণ, উপজেলা সম্মেলন, তৃণমূল নেতা থেকে জেলার শীর্ষ নেতাদের সাথে নানা কারণে মতের অমিলকে ঘিরে রয়েছে হতাশাও। তারা বলেন, জেলা-উপজেলার রাজনীতি এবং সম্মেলন সুন্দরভাবে শেষ করতে হবে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অন্যথায় জেলা-উপজেলার সম্মেলন এবং রাজনীতিকে কেন্দ্র করে হবে সহিংসতা। তবে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্মেলনের মাধ্যমে ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন হউক সেই প্রত্যাশা করছি।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মফিজুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ৮ ডিসেম্বর হওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিভাবে সুন্দর পরিবেশে এ সম্মেলন শেষ করা যাবে সে বিষয়ে বিভিন্ন উপ-কমিটিও করা হবে। ইতিমধ্যে ৮টি উপজেলার মধ্যে সাতকানিয়া, পটিয়া, লোহাগাড়া এবং চন্দনাইশে সম্মেলন হয়েছে। জেলার সম্মেলনের আগে বোয়ালখালী উপজেলার সম্মেলন হবে ১৫ নভেম্বর। আনোয়ারা-কর্ণফূলী উপজেলার সম্মেলনের বিষয়ে আগামীকাল শুক্রবার উপজেলার নেতাদের সাথে আলোচনা করে দিন-তারিখ নির্ধারণ করা হবে। বাকি বাঁশখালী উপজেলার সম্মেলন নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে, তাই এটি জেলার সম্মেলনের আগে নাকি পরে হবে সেটি এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশনা অনুযায়ী চট্টগ্রামে জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে ঘিরে চলছে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে চাঙ্গাভাবের পাশাপাশি চলছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনাও। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন উপজেলা কমিটির মেয়াদ শেষ, নতুন কমিটি গঠন, ত্যাগী ও যোগ্য নেতার খোঁজসহ নানাবিধ আলোচনা চলছে কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মাঝে। ইতিমধ্যে ৪টি উপজেলা সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। বাকিগুলোর সম্মেলন দ্রুত সময়ে হয়ে যাবে। শুধুমাত্র বাঁশখালী উপজেলা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আদৌ এই উপজেলায় জেলার সম্মেলনের আগে হবে কিনা তাও নিশ্চিত করে বলছেন না নেতারা। অন্য উপজেলা সম্মেলন নিয়ে দফায় দফায় প্রস্তুতি সভা, নেতা-কর্মীদের উঠান বৈঠক, বিভিন্ন চায়ের দোকানসহ বিভিন্ন স্থানে আলোচনাও শুরু হয়েছে। তবে এসবের মধ্যে মুখ্য আলোচনা হচ্ছে ‘কারা’ গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থান পাচ্ছেন। দলের জন্য ত্যাগী, রাজনৈতিক যোগ্যতা, অতীত কর্মকাণ্ড, নির্যাতিত, হামলা-মামলাসহ নানাভাবে যোগ্যতা বিবেচনা করেই বিভিন্ন উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে সভাপতি-সম্পাদকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসতে পারেন যোগ্য নেতারা। এসব নিয়েই কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের মাঝেও চলছে নানা কৌশলি লবিং তদবির। তাছাড়া আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের কাছেও পদপ্রত্যাশী নেতারা ধর্ণা নিচ্ছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরেই চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রয়াত আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ও মোসলেম উদ্দিন আহমেদ। আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু মারা যাওয়ার পর মোসলেম উদ্দিন আহমেদকে সভাপতি এবং মফিজুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব