পাঁচ মাস বয়সী ইয়াসমিন বিবি। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জন্ম নেয়া শিশুটি জন্মগতভাবে অন্ধ ছিল। চোখে ছানির কারণে দেখতে পাচ্ছিল না সে। কিন্তু অপারেশনের মাধ্যমে দূর করা হয়েছে তার অন্ধত্ব। দেখতে পাচ্ছে পৃথিবীর আলো। অরবিস ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১০ রোহিঙ্গা ও কক্সবাজারের স্থানীয় ৫ জনসহ মোট ১৫ জন শিশুর অস্ত্রোপচার করা হয়। মঙ্গলবার সকালে চোখের বাঁধন খুললে তারা স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায়। এ সময় তাদের ওষুধসহ যাবতীয় সেবা প্রদান করা হয়। এর আগে ১৪ ডিসেম্বর শনিবার থেকে অস্ত্রোপচার শুরু হয়।
অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হওয়া রোহিঙ্গা শিশুরা হল মো. এরফান (১২), মো. সাদেক (৩), লালু (৩.৫), এনায়েত উল্লাহ (১০), শহীদা বেগম (২), তাসমিনা তারা (৬), মো. সাহেদ (২), ইয়াসমিন বিবি (পাঁচ মাস), আতাউল্লাহ (১২), সালমান (৩) এবং কক্সবাজারের স্থানীয় মোস্তফা (১২), মো. তারেক (৭), রফিক আলম (১১), রবিউল (১০) ও মোবিন (২)।
অস্ত্রোপচার পরিচালনা করেন চক্ষু হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের ডা. মেরাজুল ইসলাম ভূইয়া, সহযোগিতা করেন প্রোগ্রামের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর নিলুফা ইয়াসমিন, এম আই এস মকবুল হোসেন, কক্সবাজার বায়তুশ শরফ চক্ষু হাসপাতালের অপটোমেট্রিস্ট মো. আব্দুল আউয়াল শাহ এবং জামিল উদ্দিন বাপ্পি।
প্রসঙ্গত, ইতোমধ্যে ১ লক্ষের বেশি হাজার রোহিঙ্গা ও স্থানীয় শিশুর চোখ পরীক্ষা এবং প্রায় ৮ হাজার শিশুকে চশমা প্রদান করা হয়েছে।
কাতার ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্টের (কিউএফএফডি) সহায়তায় অরবিস ইন্টারন্যাশনাল বাস্তবায়িত ‘কাতার ক্রিয়েটিং ভিশন (কিউসিভি) এক্সপান্ডিং আই কেয়ার ইন সাউথ ইস্ট বাংলাদেশ’ প্রকল্পের আওতায় ও কক্সবাজার বায়তুশ শরফ হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে এই অস্ত্রোপচারে টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিচ্ছে চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল।
অস্ত্রোপচারের পর শিশুদের বাবা-মায়েরা বলেন, ‘আমরা আনন্দিত। এতো দিন সন্তানের চোখ নিয়ে যে দুশ্চিন্তা ছিল তা এখন কেটে গেছে। আমরা অরবিস-সহ সবার কাছে কৃতজ্ঞ। এই চিকিৎসার ফলে আমাদের সন্তানদের সঠিক ভবিষ্যৎ নিশ্চিত হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব/রেজা