১০ জুলাই, ২০২০ ১৫:৩৭
করোনার সংক্রমণ

চট্টগ্রামে কোরবানির নানা অনিশ্চয়তা, প্রভাব মসলার বাজারেও

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে কোরবানির নানা অনিশ্চয়তা, প্রভাব মসলার বাজারেও

করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার চট্টগ্রামের কোরবানির বাজার নিয়ে নানা শংকায় আছেন বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ। সাম্প্রতিক কভিড-১৯ এর কারণে অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে মানুষ। এতে অধিকাংশ মানুষ কোরবানি নিয়ে নানা অনিশ্চয়তার কারণে গরম মসলার বাজারে প্রভাব পড়তে পারে। 

এসব কারণেই এবার ভরা মৌসুমেও চাহিদা মন্দায় কয়েক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন দামে নেমে এসেছে গরম মসলার দাম। সবমিলে এবার কোরবানির মসলা বাজারে থাকলেও ক্রেতাদের তেমন চাহিদা নেই।

জানা গেছে, মার্চ থেকে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে প্রায় দুই মাসের বেশি সাধারণ ছুটি ভোগ করে মানুষ। অর্থনৈতিক স্থবিরতায় শহর কিংবা গ্রামে মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও কমতে থাকে। এ কারণে আসন্ন কোরবানির ঈদে সাধারণ মানুষের পশু কোরবানি নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে পাইকারি মসলা বাজারে। 

দেশের বড় পাইকারী বাজার খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলেন, কোরবানির বাজারকে সামনে রেখে মসলার আমদানি ও মজুদ ছিল পর্যাপ্ত। কিন্তু রোজার ঈদের বিক্রি অনেকটা স্বাভাবিক থাকলেও কোরবানির ঈদের আগে বাজারে চাহিদা অস্বাভাবিক কমে গেছে। পণ্যের অর্ডার করছেন না, যারা করছেন আগের তুলনায় খুবই কম। এতে করে প্রতিদিনই মসলা পণ্যের দাম কমছে। ব্যাংক ঋণের কিস্তি পরিশোধের চাপে আমদানিকারক পর্যায়ে দাম কমিয়ে পণ্য বিক্রির ঘোষণা সত্ত্বেও চাহিদা বাড়ছে না। 

তারা বলেন, মসলার দাম কমতে থাকায় ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের লোকসানে পড়েছেন। দরপতনের এই ধারা অব্যাহত থাকলে পাইকারি বাজারের অনেক ব্যবসায়ী লোকসানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার শঙ্কাতেও রয়েছে বলে জানান তারা।

বাংলাদেশ গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি অমর কান্তি দাশ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দেশের করোনা পরিস্থিতির কারণে নগদ অর্থের সংকট রয়েছে সবার কাছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতাসহ নানা অনিশ্চয়তায় মানুষ বিলাস পণ্যের ক্রয় কমিয়ে দিয়েছে। এ বছর কোরবানি দেবে কিনা সে বিষয়েও অনেকেই এখনও অনিশ্চিত। আমদানিকৃত পণ্য নিয়েও ব্যাংক ঋণ পরিশোধের চাপ রয়েছে। কিন্তু চাহিদা না থাকায় প্রতিদিনই দাম কমছে গরম মসলার। সবমিলে প্রভাব পড়েছে মসলার বাজারেই।

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের তথ্য-সূত্রে জানা গেছে, কয়েকমাস ধরে ভারতীয় শুকনো মরিচ কেজিপ্রতি ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। দেশীয় আস্ত হলুদের দাম কেজিপ্রতি কমে নেমে এসেছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়, ভারতীয় হলুদের দাম ৯০ থেকে ৯২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে দাম কমতে কমতে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় নেমে এসেছে। এছাড়া দেশীয় শুকনো মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়।  একই ভাবে ভারতীয় জিরার দাম কেজিপ্রতি প্রায় ১০০ টাকা কমে ২৬০ টাকায়, আফগানিস্তানের জিরা ৩২০ টাকায়, এলাচের দাম প্রায় ৭০০ টাকা কমে ২ হাজার ৫০০ টাকায়, দারুচিনি ২৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৩২০ টাকায়, মিস্টি জিরা ৯৫ টাকায়, মিস্টি আলু বোখরা ২৮০ টাকায়, কাঠবাদাম ৬৫০ টাকায়, কাজু বাদাম ৭৫০ টাকায়, আস্ত ধনিয়া ৬৫  থেকে ৮০ টাকায়, আস্ত বাদাম ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়, ভারতীয় বাদাম ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও গোলমরিচের দাম প্রায় ৫০ টাকা কমে ৩৮০ টাকায়, সাদা গোলমরিচ সমপরিমাণ কমে ৫৫০ টাকায়, লবঙ্গ ৬৫০ টাকায়, কালোজিরা ২০০ থেকে ২২০ টাকায়, মেথি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম

সর্বশেষ খবর