বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের নগরীর অভ্যন্তরের ৭ কিলোমিটার সড়ক এখন মৃত্যুর মহাসড়কে পরিণত হয়েছে। ভারী যানবাহনের চাপায় প্রতিনিয়ত রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে মহাসড়ক। বাড়ছে স্বজনহারাদের আহাজারি। এ অবস্থায় ৭ লাখ বাসিন্দা অধ্যুষিত বরিশাল নগরবাসীর নিরাপদ চলাচলের জন্য নগরীর পাশ দিয়ে বাইপাস সড়ক নির্মানের দাবী জোড়ালো হয়ে উঠেছে।
এদিকে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ১৫ বছর আগে ২২ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে নগরীর পাশ দিয়ে সোয়া ১১ কিলোমিটার বাইপাস সড়ক নির্মানের একটি প্রকল্প হাতে নিলে তা ফাইলবন্দী অবস্থায় রয়েছে।
গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের নগরীর খান সড়কের সন্মুখে ট্রাকের চাপায় এক শিক্ষিকা নিহত হওয়ার পর এলাকাবাসীর আন্দোলনের মুখে দুর্ঘটনাস্থলে গতিরোধক নির্মান করে সড়ক বিভাগ। ওই গতিরোধকে স্বামীর মোটর সাইকেল থেকে ছিটকে পরে আরো এক শিক্ষিকা নিহত হয়। এর কয়েকদিন আগে নগরীর চৌমাথা এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় এক ব্যক্তি আহত হওয়ার জের ধরে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এভাবে নগরীর অভ্যন্তরে মহাসড়কে প্রতিনিয়ত ট্রাক-বাসের চাপায় বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। কেউ হয়ে গেছে চিরতরে পঙ্গু। তাই ১৫ বছর আগে সড়ক বিভাগের হাতে নেয়া বাইপাস প্রকল্পটি জরুরী ভিত্তিতে বাস্তবায়নের দাবী তুলেছেন নগরবাসী।
বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানায়, ১৯৯৯ সালে বরিশাল নগরীর মধ্যে থাকা ৭ কিলোমিটার ঝূঁকিপূর্ণ মহাসড়কে ভারী যানবাহন চলাচলের বিকল্প হিসেবে বাইপাস সড়ক নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয় সড়ক বিভাগ। প্রস্তাবিত বাইপাস সড়কটি বরিশাল-পটুয়াখালী সড়কের ৩ কিলোমিটার অংশে নগরীর রূপাতলী সোনারগাঁও টেক্সটাইল মিলের দক্ষিণ পাশ থেকে শুরু হবে। শহরের পাশ দিয়ে এভাবে ১১ দশমিক ২৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে নগরীর সীমান্তবর্তী গড়িয়ারপাড়ের দক্ষিণ দিকে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের ১০ম কিলোমিটারে গিয়ে বাইপাস সড়কটি শেষ হবে।
২২ কোটি ২১ লাখ টাকার প্রকল্পটি ১৯৯৯ সালে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর থেকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এরপর দীর্ঘ ১৫ বছর অতিবাহিত হলেও ‘বরিশাল বাইপাস সড়ক’ প্রকল্প ফাইলবন্দী অবস্থায় পড়ে আছে। গুরুত্বপূর্ন এই বাইপাস সড়ক নির্মানের জন্য রাজনৈতিক উদ্যোগ জরুরী বলে মনে করেন সংশ্লিস্টরা।
বরিশাল সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদ শাহেদ জানান, সরকার বাইপাস সড়কের কাজ বন্ধ রেখেছে। তবে সড়ক চওড়া করে সিগন্যাল মার্কিং বসিয়ে দুর্ঘটনা রোধের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিনি/ ১৩ মে, ২০১৬/ হিমেল-২০