‘বুদ্দি অইচে পর থাইকাই হুনতাচি বিরিজ অইব। কিন্তু বিরিজ আর অয় না। কত সরকার আইল। কোনো সরকারই তো আমাগো বিরিজ বানাইয়া দিল না।’ কথাগুলো বলছিলেন রাজধানীর সাভার উপজেলার কাউন্দিয়া ইউনিয়নের সিন্নেরটেক গ্রামের ফজলুর রহমান (৯২)।
ঢাকার মিরপুর বেড়িবাঁধ আর সাভারের আমিনবাজার ঘেঁষে বয়ে যাওয়া তুরাগ নদের তীরের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ২২টি গ্রামে প্রায় দুই লাখ ৯০ হাজার লোকের বাস। একটি সেতুর অভাবে যুগের পর যুগ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এখানকার বাসিন্দারা। নৌকা ছাড়া ইউনিয়নের বাইরে যাওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক থেকে আমিনবাজার এলাকার বাজার পার হয়ে সরু গলির মতো রাস্তা দিয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর তুরাগ নদসংলগ্ন আমিনবাজার ঘাট। আর অন্য পারে রাজধানীর মিরপুরের দারুসসালাম থানার দিয়াবাড়ী ঘাট। ইউনিয়নের লোকজন এ দুটি ঘাট ছাড়া আরও আরো ৬টি ঘাট দিয়ে ১৫ শত নৌকায় তুরাগ পার হন। আর জন প্রতি ২ টাকা নেওয়া হয় ।
কাউন্দিয়ার গাছিদিয়া এলাকার মুক্তিযোদ্ধার আব্দুল আজিজ বলেন, ছোটবেলা থেকেই তিনি নৌকায় করে তুরাগ পার হয়ে আসছেন। তিনি আরও বলেন, ভোটের সময় সবাই সেতু নির্মাণের আশ্বাস দেন, কিন্তু ভোটের পর আর মনে রাখেন না।
কাউন্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ আতিকুর রহমান শান্ত খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ইউনিয়নের রাস্তা-ঘাটের সমস্যা ছিলো। অনেকটা সমাধান হয়েছে। এখন দেড় লাখ মানুষের একটাই দুঃখ- একটি ব্রিজ। ব্রিজের অভাবে ইউনিয়নের মানুষের উন্নত জীবনের স্বপ্ন থমকে আছে। একটি সেতুর জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু কোনো সাড়া পাচ্ছি না।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আসলামুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, একনেক সভায় অনুমোদনের দেড় বছর পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ব্রিজ নির্মাণে কোনো টেন্ডার আহ্বান করা হয়নি। মেট্রো রেললাইনের জন্য ব্রিজের কাজ হচ্ছে না। তুরাগ নদীর ওপর একটা ব্রিজ তৈরি হলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে।
তিনি আরও বলেন, কাউন্দিয়া সেতু আমার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আমি আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। প্রাথমিক সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার পরও সেতু নির্মাণ-সংক্রান্ত ফাইলটি মন্ত্রণালয়ে আটকে থাকায় কাজ এগোচ্ছে না।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা