রংপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুই প্রার্থীর মধ্যে কে হবেন চেয়রম্যান শেষ মুহূর্তে চলছে হিসাব নিকেষ। আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. ইলিয়াস আহমেদের সাথে লড়বেন দল থেকে বহিষ্কৃত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু। দুইজনই নির্বাচনের বিজয়ের বিষয়ে আশাবাদী।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ২ জন, ৮টি ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে ২৯ জন ও ৩টি ওয়ার্ডে সংরক্ষিত সদস্য পদে ১৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনী সরঞ্জাম কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে। সোমবার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
জানা গেছে, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পদে থাকা বাবলুকে জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা সরে দাঁড়ানোর অনুরোধ করা হলে তিনি শেষ পর্যন্ত তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। তাই নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইলিয়াস আহমেদের সাথে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে আওয়মী লীগের একটি অংশ মনে করছেন বাবলুর নিজস্ব কিছু ভোট ব্যাংক রয়েছে। নিজস্ব ভোট ব্যাংক ধরে রাখতে পারলে তার বিজয় হবে। অপরদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইলিয়াসের সমর্থকরা মনে করছেন ভোটাররা অধিকাংশই আওয়ামী লীগের। ভোটাররা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাবেন না। ভোটাররা দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে ভোট দিলে তার বিজয় সুনিশ্চিত।
এদিকে, জেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে নির্বাচনের সরঞ্জাম পৌঁছে গেছে ভোটকেন্দ্র গুলোতে। শনিবার দুপুরে রংপুর জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় প্রাঙ্গণে ইভিএম, ব্যানারসহ ভোট অনুষ্ঠানের সরঞ্জমাদি প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক আসিব আহসান। প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়ে পিকআপে করে ইভিএমসহ অন্যান্য নির্বাচন সরঞ্জমাদি ভোটকেন্দ্রে নিয়ে গেছেন।
জেলার ৮টি উপজেলার ৮টি কেন্দ্রে জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হবে। সিসিটিভি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রিত প্রতিটি কেন্দ্রে ২টি বুথে ২টি ইভিএম যন্ত্র থাকবে। ইভিএমে কোন ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা গেলে তাৎক্ষণিক ভোটগ্রহণের জন্য একটি করে রিজার্ভ ইভিএম প্রস্তুত রাখা হয়েছে কেন্দ্রগুলোতে। জেলার ৮টি উপজেলার জনপ্রতিনিধি ভোটারদের ভোট প্রদানের সুবিধার্থে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ৫ জন করে পুলিশ ও ৪ জন করে আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। র্যাবের ২টি মোবাইল টিম ও পুলিশের ১০টি মোবাইল টিম উপজেলাগুলোতে টহল দেবে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন।
সোমবার রংপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলার একটি সিটি কর্পোরেশন, তিনটি পৌরসভা, ৮টি উপজেলা পরিষদ ও ৭৬টি ইউনিয়ন পরিষদের এক হাজার ৯৫ জন জনপ্রতিনিধিরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
রংপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আসিব আহসান বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে কেউ মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। গোপনকক্ষ থেকে শুরু করে কেন্দ্র ভিত্তিক যে নির্দেশনা আছে তা ভোটার ও প্রার্থীদের জানানো হয়েছে। প্রত্যেকটি কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকা থেকে নির্বাচন কমিশন জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ মনিটরিং করবেন। তারা যদি কোন অসঙ্গতি দেখতে পান তবে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে দিতে পারেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন