রবিবার, ৬ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
চট্টগ্রাম নগর যুবলীগ

তিন বছর পেরিয়ে এবার হতে যাচ্ছে নতুন কমিটি

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ নানাবিধ কারণে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের কমিটি গঠন হয়নি দীর্ঘ তিন বছর। জাতীয় নির্বাচনে ১৬ আসনের জয়ের চমকের পাশাপাশি আরেকটি চমক দেখানোর ইঙ্গিত দিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি ভেঙে সমন্বয়ের মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। তবে এ বিষয়ে মেয়র নাছির যুবলীগের চেয়ারম্যান  ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করবেন বলে গত বৃহস্পতিবার রাতে নগর যুবলীগের নির্বাচনোত্তর মতবিনিময় সভায় জানান। চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন আরও বলেন, দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে চলছে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম। জাতীয় নির্বাচনের জন্য এতদিন কমিটি নিয়ে চিন্তা করা হয়নি। ঢাকায় গেলে যুবলীগ চেয়ারম্যানের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করব। দ্রুত সময়ের মধ্যে যাতে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা যায় সে প্রচেষ্টা চালাব।

তিনি বলেন, রাজনীতিতে নেতা-কর্মীর কমতি নেই। কমতি রয়েছে কেবল গুণগত রাজনীতিকের। এবার কমিটিতে জনমুখী, নিবেদিত এবং দক্ষ, যোগ্য লোককে পদ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সাধারণ মানুষের কাছে যাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, দলের জন্য যাদের কন্ট্রিবিউশন এবং কমিটমেন্ট আছে তাদেরকে সুযোগ দেওয়া হবে। সুতরাং জনগণের জন্য যারা কাজ করবে তারা দৃষ্টিতে থাকবে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ তিন বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছিল হতাশা। ইতিমধ্যে নগর যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে কারা গুরুত্বপূর্ণ পদে আসছেন সেই বিষয়েও আলোচনা চলছে বিভিন্ন স্থানে। তবে সিটি মেয়র নির্বাচনে যুবলীগের আহ্বায়কসহ শীর্ষ নেতাদের অনেকেই নীরব ভূমিকাসহ নানাবিধ বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।

 চট্টগ্রামের যুবলীগকে রাজনৈতিকভাবে আরও শক্তিশালী করতে দ্রুত এ কমিটি ঘোষণা করা হচ্ছে বলেও ইঙ্গিত পাওয়া গেছে নেতা-কর্মীদের কাছে। তবে আওয়ামী লীগের কোন্দলের প্রভাবে নগর যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কমিটিও ঝুলে আছে দীর্ঘ সময় ধরেই।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ ৯ বছর পর আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যেভাবে সক্রিয় থাকার কথা ছিল পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় তেমন চাঙ্গাভাব ছিল না নেতা-কর্মীদের মধ্যে। কোনো প্রকার দায়সারাভাবে ওয়ার্ড ও থানা কমিটির কার্যক্রম চালানো হয়েছিল। তাঁরা আরও বলেন, গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কমিটির আহ্বায়কসহ বেশ কয়েকজন নেতার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। এতে আগামীতে যুবলীগের কমিটির নেতৃত্বে কারা আসছেন এ নিয়ে গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রামের নেতা-কর্মীদের মাঝে। গত ২০১৩ সালের ৯ জুলাই মহিউদ্দিন বাচ্চুকে আহ্বায়ক ও দেলোয়ার হোসেন খোকা, ফরিদ মাহমুদ, দিদারুল আলম, মাহবুবুল হক সুমন যুগ্ম-আহ্বায়ক করে ১০১ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় কমিটি। এটি তিন মাসের মধ্যে ওয়ার্ড ও থানা কমিটি গঠন করে সম্মেলন করার কথা ছিল। বর্তমানে তিন মাসের চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি ২ বছর ৫ মাস পার হয়েছে। এই কমিটি গত দুই বছরে চারটি ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করে। ২০১৩ সালে ৯ জুলাই গঠন করা বর্তমান আহ্বায়ক কমিটিও ওয়ার্ড পর্যায়ে সবগুলো কমিটি ঘোষণা করতে পারেনি। চন্দন-মশিউর কমিটির ন্যায় গত দুই বছরে এই কমিটি মাত্র চারটি ওয়ার্ডে কমিটি ঘোষণা করেছে। এরপর ২০০৩ সালে অ্যাডভোকেট চন্দন ধরকে সভাপতি এবং মশিউর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই কমিটি প্রায় ১০ বছর ক্ষমতায় থেকেও ওয়ার্ড ও থানা কমিটি করতে পারেননি।

সর্বশেষ খবর