বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

তৃণমূলে স্বাস্থ্য শিক্ষা চায় দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

তৃণমূলে স্বাস্থ্য শিক্ষা চায় দুদক

তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। চিঠিতে উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা সেল স্থাপন করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। গতকাল দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এ চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে বলা হয়, দেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি, মাতৃমৃত্যু হ্রাস, শিশুমৃত্যু হ্রাসসহ জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথা সরকারের ঈর্ষণীয় সাফল্য প্রশংসার দাবি রাখে। অপ্রিয় হলেও সত্য, স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম কিছুটা হলেও ম্রিয়মাণ। আধুনিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার মূলভিত্তি হচ্ছে ‘প্রতিরোধ প্রতিষেধকের চেয়ে উত্তম। এ কথাও সত্য যে, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগ মাঝে মাঝে বিভিন্ন স্বাস্থ্য ইস্যু নিয়ে গণমাধ্যমে কিছু তথ্য প্রচার করে থাকে। এ কারণে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষকে বিশেষ করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ইস্যুতে সচেতন করা অত্যন্ত জরুরি। এ কথা অনস্বীকার্য যে, আমাদের দেশের মানুষদের পরিবেশগত কারণেও সংক্রামক রোগের প্রকোপসহ বিভিন্ন প্রকার স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনাচারে সর্বস্তরে জনস্বাস্থ্য-সংক্রান্ত তথ্যের নিবিড় বা বহুল প্রচার ও প্রকাশের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। চিঠিতে ইকবাল মাহমুদ আরও উল্লেখ করেছেন, দুদক মনে করে এই বিশাল জনসংখ্যার দেশে তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম প্রসারের জন্য অন্তত উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা সেল স্থাপন করা আবশ্যক। শুধু সেল স্থাপন নয়, তাদের চার্টার অব ডিউটিজ-এ সুনির্দিষ্ট কর্মবণ্টন করা সমীচীন।

এই কর্মবণ্টন অনুসরণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিশেষ করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের কোমল হৃদয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুশীলন করতে উপজেলা পর্যায়ের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত এসব স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তাগণ জনস্বাস্থ্য বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অবহিত করবেন। তাদের কোমল হৃদয়ে স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপনের বীজ বপন করবেন। শিক্ষার্থীদের হাত ধোয়া থেকে শুরু করে সব ধরনের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, মশা-মাছিসহ কীটপতঙ্গবাহিত রোগ প্রতিরোধ, আর্সেনিকসহ সব ধরনের পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধ, পরিবেশ দূষণ থেকে নিজেকে রক্ষার উপায়, স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত পরিবর্তিত পরিবেশে নিজেকে খাপ খাওয়ানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে পারেন। এ ছাড়া স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা তথ্য কর্মকর্তা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে তৃণমূল পর্যায়ের যেখানে জনসমাগম ঘটে এমন স্থানে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নসহ বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক বিষয়ে চলচ্চিত্র প্রদর্শন, নাটক, গানসহ বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা যেতে পারে। চিঠিতে বলা হয়, এভাবে সচেতন করা গেলে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনে পরবর্তী প্রজন্ম অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। সর্বোপরি জনস্বাস্থ্য নিয়ে মানুষকে সচেতন করা গেলে মানুষের চিকিৎসা ব্যয় হ্রাস পেতে পারে। একই সঙ্গে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন মনে করে, জনস্বাস্থ্য-সংক্রান্ত বিষয়ে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি করা গেলে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে যেসব অনিয়ম, দুর্নীতি বা হয়রানির কথা শোনা যায় তা বহুলাংশে কমে আসবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর