মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

শাহ আমানতে ‘কন্ট্রাক্ট’ সিন্ডিকেট

আমিরাতে শ্রমবাজার হাতছাড়া হওয়ার শঙ্কা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

শাহ আমানতে ‘কন্ট্রাক্ট’ সিন্ডিকেট

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চলছে ভয়াবহ কন্ট্রাক্ট বাণিজ্য। সংযুক্ত আরব আমিরাতগামী ভিজিট ভিসাধারী যাত্রীদের কাছ থেকে ইমিগ্রেশনের নামে আদায় করা হচ্ছে যাত্রীপ্রতি দেড় থেকে ২ লাখ টাকা। ইমিগ্রেশনে প্রতিবন্ধকতার ফলে আমিরাতে শ্রমবাজার সুসংহত করার যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, কন্ট্রাক্ট এ বাণিজ্যের সঙ্গে ইমিগ্রেশনের কতিপয় সদস্য ছাড়াও জড়িত কিছু অসাধু ট্রাভেল এজেন্সি। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনের পুলিশ সুপার জাকির হোসেন বলেন, ‘কয়েক দিন আগেও ভিজিট ভিসার যাত্রীদের নিয়ে কিছু জটিলতা ছিল। কর্তৃপক্ষের নির্দেশের পর বর্তমানে তা স্বাভাবিক রয়েছে। ইমিগ্রেশনে কন্ট্রাক্টের কোনো সিস্টেম নেই। বর্তমানে ভিজিট ভিসাধারী কারও কাছ থেকে টাকাও আদায় করা হয় না।’  সংযুক্ত আবর আমিরাতের রাস আল খাইমার বাংলাদেশি কমিউনিটি নেতা এম এ মুছা বলেন, ‘ভিজিট ভিসায় আসা বাংলাদেশিদের ভিসার স্ট্যাটাস পরিবর্তনের সুযোগ দিয়েছে আমিরাত সরকার। এতে করে বাংলাদেশিদের শ্রম বাজার সুসংহত করার সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশি ইমিগ্রেশনের কিছু অসাধু ব্যক্তির খামখেয়ালির কারণে তা নষ্ট হচ্ছে। ভিজিট ভিসায় আসা বাংলাদেশিদের টাকা ছাড়া কেউ ইমিগ্রেশন পার হতে পারেন না। এ বিষয়ে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’   জানা যায়, দীর্ঘ সময় পর সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার বাংলাদেশির জন্য বিভিন্ন সেক্টরের ভিসা লাগানোর সুযোগ দিয়েছে। এতে করে ভিজিট ভিসায় গিয়ে যে কেউ ভিসা স্ট্যাটাস পরিবর্তন করে কোম্পানি ভিসা ও ব্যবসায়িক ভিসা লাগানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে। এতে করে দীর্ঘদিনের বন্ধ থাকা আমিরাতের শ্রমবাজার বাংলাদেশিদের সুসংহত করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগতে অনেক বাংলাদেশি ভিজিট ভিসায় গিয়ে স্ট্যাটাস পরিবর্তন করে বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি করছেন। অনেকে অভিন্ন কায়দায় আমিরাতে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। কিন্তু প্রবাসীদের অভিযোগ, ভিজিট ভিসাধারীদের ইমিগ্রেশন করানোর নামে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গড়ে উঠেছে ভয়াবহ কন্ট্রাক্ট বাণিজ্যের সিন্ডিকেট। তারা ভিজিট ভিসা নিয়ে আমিরাতে যাওয়া ব্যক্তিদের ‘ইমিগ্রেশন পাসের’ নামে হাতিয়ে নিচ্ছে ১ থেকে ২ লাখ টাকা। এ সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছে চট্টগ্রামের ৫ ট্রাভেল এজেন্সি। তাদের সঙ্গে যুক্ত ইমিগ্রেশনের কয়েকজন পরিদর্শক ও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা। প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটি নেতাদের অভিযোগ কণ্ট্রাক্ট ছাড়া ভিজিট ভিসাধারীদের কেউ ইমিগ্রেশন পার হতে পারে না। কন্ট্রাক্ট ছাড়া কেউ গেলে ইমিগ্রেশনে নানান হয়রানীর পর বিমানের উঠতে না দেয়ার ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে। হয়রানির শিকার রাউজান এলাকার আবু সায়েদ নামে এক যাত্রী অভিযোগ করেন, ‘গত বৃহস্পতিবার আমিরাতের জন্য বিমানবন্দরে যান তিনি ও তার বন্ধু। কিন্তু বিমানবন্দর কন্ট্রাক্ট না থাকায় তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। দুই দিন পর দালাল চক্রের সঙ্গে কন্ট্রাক্ট করে তার বন্ধু আমিরাতে গেলেও তিনি যাননি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর