আংশিক কমিটি ঘোষণার প্রায় আড়াই বছর পর পূর্ণাঙ্গ হয়েছে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি। ৩২১ সদস্যের জেলা ও ২৬১ সদস্যের মহানগর ছাত্রদলের ‘ঢাউস’ কমিটিতে খুশি পদপ্রত্যাশী সব নেতা। ‘বিশাল কমিটি’ থেকে কেউ বাদ না পড়ায় খুশি সবাই।
অন্যদিকে প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে কমিটিবিহীন অবস্থায় আছে সিলেট ছাত্রলীগ। কমিটি না থাকায় নেতৃত্বহীন ছাত্রলীগে দিন দিন বাড়ছে বিভক্তি। ঘটছে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা। নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছেন বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়া নেতা-কর্মীরা। কমিটি না থাকায় নেতা-কর্মীদের বিতর্কিত কর্মকান্ডের দায়ও নিতে চায় না কেউ।
ছাত্রদলে সবাই খুশি : ২০১৮ সালের ১৩ জুন সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্র থেকে প্রতিটি ইউনিটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ২৮ জনের নাম ঘোষণা করা হয়। এরপর বিভিন্ন সময় উদ্যোগ নেওয়া হলেও নানা বিতর্কে আলোর মুখ দেখেনি পূর্ণাঙ্গ কমিটি। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেন। কমিটিতে পদপ্রত্যাশী বিবাহিত, অছাত্র ও পেশাজীবী কেউই বাদ যাননি। ‘সবাইকে খুশি করার’ এই কমিটিতে স্থান পেয়েছেন পদপ্রত্যাশী প্রায় সব নেতাই। আংশিক কমিটি ঘোষণার পর দলের নেতা-কর্মীদের মাঝে যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছিল ‘ঢাউস’ এই কমিটির মাধ্যমে তার অবসান ঘটেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সিলেট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিসহ নানা কারণে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে সময় বেশি লেগেছে। তাই এবার কমিটির পরিধি বড় করে সবাইকে সন্তুষ্ট রাখা হয়েছে। যে কারণে বিবাহিত ও পেশাজীবীরাও কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। তবে আগামীতে আর এ রকম কমিটি হবে না।’হতাশা কাটছে না ছাত্রলীগে : দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ছাত্রদল কমিটি পেলেও হতাশা কাটছে না ছাত্রলীগে। প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে নেতৃত্বহীন অবস্থায় আছে সিলেট ছাত্রলীগ। আর কলেজগুলো কমিটিবিহীন অবস্থায় আছে প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরে। নিজেদের মধ্যে মারামারি, খুনোখুনির ঘটনায় ২০১৭ সালের ১৮ অক্টোবর সিলেট জেলা ছাত্রলীগ এবং বিতর্কিত নানা কর্মকান্ডের কারণে ২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতৃত্বে পরিবর্তন এলেও কমিটি পায়নি সিলেট ছাত্রলীগ। দুই ইউনিটে কমিটি গঠনের লক্ষ্যে কয়েকবার কেন্দ্র থেকে সিভি (জীবনবৃত্তান্ত) আহ্বান করা হলেও শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। কমিটি না থাকায় সিলেটে নেতৃত্বহীন ছাত্রলীগ বহুধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে।
সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম তুষার বলেন, ‘কমিটি না থাকায় সিলেটে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ছে। নেতৃত্বহীন নেতা-কর্মী নানা গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ছেন। এতে দলের মধ্যে বিভক্তি ও সমন্বয়হীনতা বাড়ছে। এ অবস্থায় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ ও চাঙ্গা করতে কমিটির কোনো বিকল্প নেই।’