বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের এমপিরা বলেছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য দরকার বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান। অর্থমন্ত্রী বিনিয়োগবান্ধব ও কর্মসংস্থানবান্ধব বাজেট প্রণয়ন করেছেন। এ বাজেট কভিড পরবর্তী অর্থনীতিকে এগিয়ে নেবে। তবে বিরোধী দলের সদস্যরা বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটের কারণে অর্থনীতিতে বেশ কিছু অনিশ্চয়তা দেখা দেবে। যেমন- মূল্যস্ফীতির অনিশ্চয়তা, ব্যাংক নির্ভরতার অনিশ্চয়তা তৈরি হবে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও প্যানেল স্পিকার ক্যাপ্টেন এ কে তাজুল ইসলাম (অব.)-এর সভাপতিত্বে গতকাল একাদশ সংসদের বাজেট অধিবেশনের বৈঠকে প্রস্তাবিত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন। আলোচনায় অংশ নেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, আওয়ামী লীগের কাজী নাবিল আহমেদ, বেনজির আহমেদ, তাহজিব আলম সিদ্দিকী, মুহিবুর রহমান মানিক, জিল্লুল হাকিম, কেরামত আলী, পঙ্কজ দেবনাথ, হাবিবা রহমান খান, হোসনে আরা, আদিবা আনজুম মিতা, বেগম সালমা চৌধুরী, রানা মোহাম্মদ সোহেল, জাতীয় পার্টির মাসুদ উদ্দীন চৌধুরী, এলডিপির মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান প্রমুখ।
অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক বলেন, বর্তমান সরকারের গত ১৩ বছরের উন্নয়নের কথা বলে শেষ করা যাবে না। এ সময়ে সারা দেশের চিত্রই পাল্টে গেছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা ষড়যন্ত্র ও বাধা মোকাবিলা করেই স্বপ্নের পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করে গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়েছেন।সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে বলেন, আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, এটা সমগ্র বিশ্বে প্রশংসা পাচ্ছে। তাহজিব আলম সিদ্দিকী বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের সোনার সেতু। সক্ষমতার প্রতীক। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছে বিএনপি। জাতীয় পার্টির মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী বাজেট বাস্তবায়নের জন্য সংশয় প্রকাশ করে বলেন, এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থনীতিতে বেশ কিছু অনিশ্চয়তা দেখা দেবে। মূল্যস্ফীতির অনিশ্চয়তা, ব্যাংক নির্ভরতা বেসরকারি খাতকে ভোগাবে বলে মনে হয়। ভর্তুকি ঘাটতি কীভাবে আসবে বাজেটে তার কোনো পথ দেখানো হয়নি। তিনি বলেন, মাত্র ৭ শতাংশ কর দিয়ে এসব পাচারকৃত অর্থ বৈধ করা যাবে- অথচ অন্যরা এর চেয়ে অতি উচ্চ হারে কর দিতে বাধ্য হন। এতে অর্থ পাচারে উৎসাহিত করা হবে। এলডিপির মেজর (অব.) আবদুল মান্নান বলেন, বাজেট উচ্চাভিলাষী হলেও গ্রহণযোগ্য। বাজেটর পরিমাণ জাতীয় আয়ের তুলনায় খুব বড় নয়। তবে বাজেট বাস্তবায়নে সন্দেহ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এডিপি বাস্তবায়নে গত অর্থবছরে ব্যয়ের চিত্র ছিল হতাশাজনক। পঙ্কজ দেবনাথ বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য দরকার বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান।
বিনিয়োগবান্ধব ও কর্মসংস্থানবান্ধব বাজেট প্রণয়নের জন্য তিনি অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে চ্যালেঞ্জ নিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন। জিল্লুল হাকিম বলেন, পদ্মা সেতু আমদানি-রপ্তানী বাড়াবে। এই বাজেট সঠিক ও বাস্তবসম্মত। সমালোচনা না করে বাজেট কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সেদিকে নজর দেওয়া উচিত।
জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারদলীয় সদস্যরা বলেন, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নিজস্ব অর্থায়নে প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন। এই সেতুর কারণে সারা দেশের চিত্র পাল্টে যাবে। তারা আরও বলেন, এখনো ষড়যন্ত্র চলছে। এ সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক করতে হবে।