সোমবার, ৩ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

খুলনা সড়ক ও জনপথে আতঙ্ক

৯৪ প্রকল্পের তথ্য সংগ্রহ করেছে দুদক, টেনশনে কর্মকর্তা কর্মচারীরা, তদন্ত কমিটি গঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনা সড়ক ও জনপথে আতঙ্ক

খুলনায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) বাস্তবায়িত ৯৪টি প্রকল্পের তথ্য সংগ্রহ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরের ডিপিএম (ডাইরেক্ট প্রকিউরমেন্ট মেথড) পদ্ধতিতে টেন্ডার কাজের তালিকা, পিএমপি (সড়ক-মেজর) বরাদ্দ কাজের তালিকা ও খুলনা-চুকনগর-সাতক্ষীরা সড়কে রিজিট পেইভমেন্ট কাজের টেন্ডার ডকুমেন্টস সংগ্রহ করা হয়েছে।

দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রকল্পের কাজে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ যাচাইয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এদিকে দুদকে অনুসন্ধান কাজ শুরু হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন সড়ক বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এরই মধ্যে কয়েকটি কাজের মান যাচাইয়ে সড়কে অভ্যন্তরীণ বিভাগীয় তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। জানা যায়, সড়ক ও জনপদ অধিদফতর খুলনা সার্কেল তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তাপসী দাসের কর্মকালে সড়কে ডিপিএম টেন্ডার কাজ, পিএমপি বরাদ্দ কাজের অনিয়ম নিয়ে তদন্ত করছেন দুদকের সহকারী পরিচালক বিজন কুমার রায়। তিনি সড়ক বিভাগে দেওয়া চিঠিতে ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাস্তবায়নকৃত কাজের তালিকা, নিয়োগকৃত ঠিকাদারের নাম, দাখিলকৃত দর ও টিইসি সদস্যদের নাম-পদবি সংগ্রহ করেছেন। খুলনা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনিসুজ্জামান মাসুদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, দুদকের পাশাপাশি সড়কের কয়েকটি প্রকল্পে বিভাগীয় তদন্তও শুরু হয়েছে। এর মধ্যে নগরীর পাওয়ার হাউস মোড় থেকে ময়লাপোতা পর্যন্ত রিজিট পেইভমেন্ট ঢালাই কাজে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সিকিউরিটি মানির ৭০ লাখ টাকা আটকে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া টেন্ডারের উল্লিখিত মান অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন করার জন্যও কয়েক দফা তাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

কর্মকর্তারা জানান, ২০২১ সালে ৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নগরীর পাওয়ার হাউস মোড় থেকে ময়লাপোতা ৭০০ মিটার সড়কে রিজিট পেইভমেন্ট আরসিসি ঢালাই কাজ করে রানা বিল্ডার্স (প্রা.) লিমিটেড। সড়কটি ৫০ বছর টেকসই হওয়ার কথা থাকলেও নিম্নমানের নির্মাণকাজের দুই সপ্তাহের মধ্যে ঢালাইয়ের ওপরের অংশ উঠে গেলে তাৎক্ষণিক তদন্ত টিম করা হয়। তবে নিম্নমানের কাজের ধামাচাপা দিতে ওই বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতের আঁধারে বিটুমিন দিয়ে আরসিসি ঢালাইয়ের ওপর আবারও ঢালাই দেওয়া হয়। ঘটনার প্রতিবাদে শহিদুল ইসলাম বাবুর নেতৃত্বে ঠিকাদাররা খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।

এদিকে সর্বশেষ সড়ক বিভাগ, কুষ্টিয়ার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মাসুদ করিম এবং সাতক্ষীরা নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজামউদ্দিনের সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি পাওয়ার হাউস মোড় থেকে ময়লাপোতা ৭০০ মিটার সড়কে রিজিট পেইভমেন্ট আরসিসি ঢালাইয়ে অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তদন্তে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েটে) ল্যাবে পরীক্ষায় ঢালাই কাজে কংক্রিট স্ট্রেন্থ বা শক্তি পরিমাপ ৪০ এর বদলে ২০ দেওয়ার প্রমাণ মিলেছে। খুলনা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনিসুজ্জামান মাসুদ বলেন, দুদক যেসব কাজের তথ্য সংগ্রহ করছে তার অধিকাংশই আমার এখানে যোগদানের আগের বাস্তবায়িত কাজ। তিনি বলেন, কয়েকটি কাজের বিষয়ে একই সঙ্গে বিভাগীয় তদন্তও হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর