বুধবার, ৩১ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

আইসিসিবিতে এক ছাতার নিচে এলপিজির সব পণ্য

দুই দিনব্যাপী এশিয়ান সামিট শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক

আইসিসিবিতে এক ছাতার নিচে এলপিজির সব পণ্য

নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি হিসেবে দেশে এলপিজি (তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস) প্রসারের লক্ষ্যে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী এশিয়া রিজিওনাল এলপিজি সামিট। ওয়ার্ল্ড এলপিজি অ্যাসোসিয়েশন এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে। গতকাল শুরু হওয়া বৃহৎ এ আয়োজনে প্লাটিনাম পার্টনার ও ভেন্যু হোস্ট হিসেবে রয়েছে বসুন্ধরা এলপি গ্যাস লিমিটেড। আয়োজনকে মনোজ্ঞ করে তুলতে গতকাল সন্ধ্যায় আইসিসিবির রাজদর্শন হলে এলপিজি নাইট আয়োজন করা হয়। আইসিসিবির নবরাত্রি হলে আয়োজিত এ সম্মেলন ও প্রদর্শনীতে ৩০টি দেশের ৪০টির বেশি প্রতিষ্ঠান এলপিজির বিভিন্ন পণ্য নিয়ে স্টল সাজিয়েছেন। তুলে ধরা হয়েছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এলপি গ্যাস, সিলিন্ডার, গ্যাস ভালব, গ্যাস রেগুলেটর, অটোগ্যাস স্টেশন মেশিনারিজ, শিল্প কারখানায় এলপিজি প্লান্ট স্থাপন সরঞ্জামসহ এই শিল্পের সবকিছু। বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন শতাধিক ডেলিগেট। গতকাল প্রদর্শনীর প্রথম দিনেই ছিল দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীর ভিড়। সামিটে এলপিজি পণ্য প্রদর্শনীর পাশাপাশি চলছে দিনব্যাপী সেমিনার। এতে বিভিন্ন দেশের এলপিজি খাতের প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন। সামিট শেষ হবে আজ সন্ধ্যায়।

দেশে এক যুগের বেশি সময় ধরে গৃহস্থালিতে গ্যাস সংযোগ বন্ধ রয়েছে। এ সময় বেড়েছে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয়। বেড়েছে জীবনযাত্রার মান। তাতে নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এলপিজি। গ্রামাঞ্চলেও এখন খড়ি-লাকড়ির চুলার পরিবর্তে গ্যাসের চুলায় রান্না হচ্ছে। এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আহসানুল জব্বার বলেন, ২০১৪ সালে দেশে এলপিজির চাহিদা ছিল ১ লাখ টন, এখন চাহিদা বেড়ে হয়েছে ১৫ লাখ টন। এরই মধ্যে বাংলাদেশে এই খাতে বিনিয়োগ হয়েছে ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি। জ্বালানি হিসেবে এলপিজি নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব। এ ছাড়া বাসাবাড়িতে লাইনের প্রাকৃতিক গ্যাসের চেয়ে এলপি গ্যাস সাশ্রয়ী। এই আন্তর্জাতিক সামিটের মাধ্যমে আমরা নিজেদের এবং অন্যান্য দেশের এলপিজি সম্পর্কে ধারণা পাব। সামিট আয়োজনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের (সেক্টর-এ) পরিকল্পনা ও জনসংযোগ প্রধান এবং বিএলএনজি, বিপিপিএল-এর বিভাগীয় প্রধান ইঞ্জি. মো. জাকারিয়া জালাল গণমাধ্যমকে বলেন, বাংলাদেশে জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় এলপিজি বড় ভূমিকা রাখছে। এই সামিটের মূল উদ্দেশ্য এলপিজি ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং উন্নত দেশগুলোর প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা দেওয়া। একই সঙ্গে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের এলপিজির মান তুলে ধরা। এই সামিটের মাধ্যমে বাংলাদেশসহ আশপাশের দেশগুলোতে এলপিজির মার্কেট সম্প্রসারণে স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এ ছাড়া ভোক্তা পর্যায়ে দেশীয় অপারেটররা কী ধরনের উন্নয়ন করেছে সেগুলোও গ্রাহকরা এখানে এসে জানতে পারবেন। ওয়ার্ল্ড এলপিজি অ্যাসোসিয়েশনের সিইও এবং এমডি জেমস রোক্যাল বলেন, বাংলাদেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের ঘাটতি থাকায় এলপিজি গ্যাসের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এখন সারা বিশ্বেই জ্বালানি সংকট সমাধানে এলপিজি ভূমিকা রাখছে। এই সামিট বাংলাদেশে এলপিজি ব্যবসার প্রসার ঘটাবে। আমরা চাই বাংলাদেশে এলপিজির আরও ভালো মার্কেট তৈরি হোক। কারণ এটার ব্যবহার খুব সহজ ও নিরাপদ। সরেজমিন প্রদর্শনী ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা তাদের পণ্যের গুণাগুণ আগত দর্শনার্থীদের সামনে তুলে ধরছেন। বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের এজিএম কাজী রোকন উদ্দিন বলেন, দুই দশকের বেশি সময় ধরে দেশের মার্কেট শেয়ারে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে বসুন্ধরা এলপি গ্যাস। বর্তমানে এটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। গুণগত মান বজায় রেখে গত দুই দশকে ধারাবাহিকভাবে বেস্ট ব্র্যান্ড এবং সুপার ব্র্যান্ড স্বীকৃতি পেয়েছে বসুন্ধরা এলপি গ্যাস। শিল্প-কারখানায় এলপিজির প্লান্ট স্থাপনকারী দেশীয় প্রতিষ্ঠান বাদ্রার্স এলপিজির স্টলে কথা হয় প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা যে কোনো শিল্প-কারখানায় এলপিজি প্লান্ট স্থাপন করতে সক্ষম। প্লান্ট স্থাপনের জন্য মালামাল চীন ও জাপান থেকে আনা হয়। এ ছাড়াও শিল্প-কারখানার মালিকদের পছন্দ অনুযায়ী দেশ থেকেও পণ্য এনে প্লান্ট স্থাপন করে দেই। প্রদর্শনীতে বিভিন্ন শিল্প-কারখানার প্রতিনিধিরা আমাদের স্টলে আসছেন, আমাদের কাজগুলো সম্পর্কে জেনে যাচ্ছেন। আশা করি এই সামিট আমাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর