সমুদ্রনগর কক্সবাজারে ট্রেন নিতে কাটা হয়েছে পাহাড় ও সংরক্ষিত বনাঞ্চল। ১০১ কিলোমিটারের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল ১১ দশমিক ৯২ কিলোমিটার এলাকার পাহাড়। আর এসব পাহাড় খাড়াভাবে কাটার কারণে এ রেল পথে নতুন করে ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি ও ভারী বৃষ্টিতে খাড়াভাবে কাটা এসব পাহাড় ধসে বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এ রেলপথটি। তবে রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ রেললাইনের ২৭ কিলোমিটার এলাকা পাহাড় আছে। তার মধ্যে চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের হাছান কাটার পাশ দিয়ে যাওয়া রেললাইনের কয়েকটি জায়গায় ইতোমধ্যে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে ওই এলাকার সমস্যা সমাধানের পর এ বর্ষা মৌসুমে কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. সবুক্তগীন বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণের সময় প্রায় ২৭ কিলোমিটার পাহাড়ি এলাকা ছিল। ২৭ কিলোমিটারের মধ্যে ১০০ মিটার এলাকায় কয়েক বছর আগে বৃষ্টিতে কিছু মাটি রেললাইনে পড়েছিল। এটা ন্যাচারাল একটি বিষয়। এর পরও পাহাড় থেকে যেন মাটি লাইনে না আসে তার জন্য টেকসই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যার কারণে এ বছর বর্ষায় আর কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি। তবে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি দাবি করেছেন, টানা বৃষ্টি হলে চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের হাছান কাটাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় পাহাড় ধসের শঙ্কা রয়েছে। রেললাইন নির্মাণে ২৭ কিলোমিটার এলাকার পাহাড় কাটা হয়েছে। এমনভাবে পাহাড় কাটা হয়েছে, সে পাহাড়গুলোতে এখন পর্যন্ত কোনো ঘাস জন্মায়নি। এই রেলপথের লোহাগাড়ার চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য থেকে শুরু করে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং এলাকা পর্যন্ত দুই পাশে পাহাড় কেটে নির্মিত রেললাইনের অংশে পাহাড়গুলো ঝুঁকি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বেশি বৃষ্টি হলেই তা ধসের আশঙ্কা রয়েছে।
গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার গাইন্যাকাটা এলাকায় বিশাল অংশে পাহাড় ধসে পড়ে রেললাইনের ওপর। ফলে দীর্ঘ ৮ ঘণ্টা বন্ধ ছিল ট্রেন চলাচল। এ ছাড়াও সাতকানিয়া অংশের কয়েকটি ইটভাটার জন্য রেললাইনের পাশ থেকে মাটি কাটা হয়েছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের মৌলভীর দোকান থেকে কেঁওচিয়া ইউনিয়নের আঁধারমানিক দরগাহ লাগোয়া কেরানিহাট লেভেলক্রসিং এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রেললাইনের পাশ থেকেই কাটা হয়েছে মাটি। এ কারণে পাশের জমি জলাশয়ে রূপ নিয়েছে। লোহাগাড়ার আমিরাবাদ, আধুনগর ও চুনতি এলাকায়ও রেললাইনের পাশ থেকে কাটা হয়েছে মাটি। যার কারণে রেললাইন থেকে মাটি সরে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।