ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন প্রার্থীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অবস্থান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে মোট চার দফায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবস্থান জানানো হয়। প্রশাসন জানায়, দাখিলকৃত আবেদনপত্র বা দরখাস্তগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করে আইনগত মতামত নেওয়া হয়েছে। সেখানে প্রথম দফায় বলা হয়, কয়েকজন আবেদনকারী আমাদের কাছ থেকে নির্বাচনের দিন ধারণকৃত এবং পরবর্তীতে সংরক্ষণকৃত সিসিটিভি ফুটেজের পুরোটাই চেয়েছেন। আমরা বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা করেছি এবং আইনজীবীদের মতামতও নিয়েছি।
সিসিটিভি ফুটেজ কোনো পাবলিক ডকুমেন্ট নয়। তারপরও কোনো প্রার্থী যদি সুনির্দিষ্ট কোনো সময়ের/কোনো একটি প্রাসঙ্গিক ঘটনা পর্যালোচনা করার জন্য সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে চান তারা যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মনোনীত ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নির্ধারিত কোনো স্থানে তা দেখতে বা পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।
দ্বিতীয় দফায় বলা হয়, ভোটারদের স্বাক্ষরিত তালিকা প্রদানের অনুরোধের ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনি কর্তৃপক্ষ মনে করে এটি একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও গোপনীয় তালিকা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর নির্বাচন সংক্রান্ত বিধিতে এটির কপি প্রদানের কোনো বিধান নেই। তা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থী ভোট কেন্দ্রে এসে, প্রাথমিক তথ্যাদি প্রদান করে, ব্যালট পেপার সংগ্রহ করে যে তালিকায় স্বাক্ষর করেছেন সে তালিকাটি একটি অত্যন্ত গোপনীয় তালিকা। এটিও কোনো পাবলিক ডকুমেন্ট নয়। সুতরাং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা সংরক্ষণের স্বার্থে এটি দেওয়া কর্তৃপক্ষ যথাযথ মনে করে না।
তৃতীয় দফায় বলা হয়েছে, ব্যালট পেপার ছাপানোর প্রতিষ্ঠানের পরিচয় সচেতনভাবে গোপন রাখা হয়েছে। এই গোপনীয়তা রক্ষা একটি স্বীকৃত পদ্ধতি। দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ব্যালট পেপার ছাপানোর পরে নির্দিষ্ট পরিমাপে কার্টিং করে তা ওএমআর মেশিনে প্রি-স্ক্যানিংপূর্বক মেশিনের পাঠযোগ্যতা নিশ্চিত করে সিলগালাকৃত প্যাকেটে সরবরাহ করেন। যে ওএমআর মেশিনে স্ক্যানিং করে ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজ সম্পন্ন করা হয় তা নীলক্ষেতের কোনো দোকানে সম্ভব নয়। সুতরাং যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পূর্ণ গোপনীয়তা রক্ষা করে ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজ করা হয়েছে তাতে এটি অরক্ষিত থাকার সুযোগ নেই। অতএব নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পর ব্যালট পেপারের মুদ্রণ নিয়ে এই অভিযোগের কোনো ভিত্তি আছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করে না।
চতুর্থ দফায় বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে সব আবেদন/দরখাস্ত/অভিযোগ পরীক্ষা নিরীক্ষা সম্পন্ন করেছে। যথাসময়ে প্রত্যেককে জবাব/সিদ্ধান্ত প্রেরণ করা হবে।