আঙুলের ছাপে মিলছে অজ্ঞাত রোগীর পরিচয়। আঙুলের ছাপ থেকে পরিচয় পাওয়ার পর ২৪ জনকে স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশের ফরেনসিক বিভাগ, সিআইডি ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সহায়তায় পরিচয় নিশ্চিত হয়ে অজ্ঞাত এই রোগীদের নিজ নিজ স্বজনদের কাছে পৌঁছে দিয়েছে।
১০ আগস্ট রামেক হাসপাতালের ‘অজ্ঞাত রোগীদের জন্য অস্থায়ী ওয়ার্ড’-এ গিয়ে দেখা যায় সেখানে পাঁচজন রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। এর মধ্যে দুজন নারী ও তিনজন পুরুষ। তাদের বিভিন্ন সময় রামেক হাসপাতালে কে বা কারা ভর্তি করে গিয়েছেন। তার পর থেকে পরিচয় না পাওয়া এসব রোগীর ঠাঁই হয়েছে এই ওয়ার্ডে। তাদের কেউ কেউ কথা বলতে পারলেও জানাতে পারে না নিজের পরিচয়। ফলে চিকিৎসাসেবা শেষে সুস্থ জীবনের দ্বারপ্রান্তেও খোঁজ মেলে না স্বজনদের।
সম্প্রতি রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসব অজ্ঞাত রোগীর পরিচয় শনাক্তের ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে তারা ২৪ জন অজ্ঞাত রোগীর পরিচয় শনাক্ত করেছেন। একই সঙ্গে অজ্ঞাত রোগীদের তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রামেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে ভর্তিরত অজ্ঞাত রোগীর আঙুলের ছাপের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্তকরণে দরখাস্তের মাধ্যমে আবেদন দেওয়া হয় পুলিশের বিশেষ শাখায়। এরপর সিআইডি বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা হাসপাতালে এসে রোগীদের আঙুলের ছাপ নিয়ে যান। পরিচয় শনাক্ত করে তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানায়। এর পর সেই অজ্ঞাত রোগীকে স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। রোগী সুস্থ হওয়া মাত্রই যোগাযোগ করা হয় রোগীর স্বজনদের সঙ্গে। তারা নিতে না আসলে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয় অজ্ঞাত থেকে নাম-পরিচয় পাওয়া মানুষকে।
রামেক হাসপাতালে আঙুলের ছাপে পরিচয় শনাক্ত হওয়া রোগীদের মধ্যে আছেন রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার শাহজাহান আলী (৫০), গাজীপুরের প্রবাসীর স্ত্রী শিউলি ছাড়াও রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুরের নার্গিস। নার্গিসকে মাসখানেক আগে কে বা কারা অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করেন। তার স্বামীর বাড়ি গাজীপুরে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার আঙুলের ছাপ নিয়ে পরিচয় শনাক্ত করা হয়। পরে তার পরিবারকে জানানো হয়। কিন্তু তারা হাসপাতালে আসেনি। পরে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান।
রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শঙ্কর কে বিশ্বাস বলেন, আগে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে অজ্ঞাত রোগীরা থাকত। তবে হাসপাতালের পরিচালক তাদের জন্য আলাদা থাকার ওয়ার্ড করেছেন। সেখানে তারা চিকিৎসা পাচ্ছে। অনেক অজ্ঞাত রোগীকে আঙুলের ছাপ থেকে পরিচয় শনাক্ত করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।