রাজশাহীতে সরকারি হাসপাতালের সামনে নিয়ম না মেনে গড়ে উঠছে ক্লিনিক। আইন অনুযায়ী হাসপাতালের সামনে বেসরকারি ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার স্থাপন নিষিদ্ধ হলেও রাজশাহী অঞ্চলের সব উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে ও আশপাশে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
ভালো চিকিৎসার নামে এসব ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিকের দালালরা হাসপাতালের রোগী ভাগিয়ে নেন। পরে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসায় সর্বস্ব হারান রোগীরা। ফলে একদিকে যেমন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আইন অমান্য হয়, অন্যদিকে রোগীর চিকিৎসা অধিকার পড়ে হুমকিতে। প্রথমে তারা সরকারি হাসপাতালে ভর্তির জন্য এলেও ভর্তি হওয়ার আগেই ভাগিয়ে নেওয়া হয় বেসরকারি ক্লিনিকে। সরেজমিন দেখা যায়, জেলার চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনেই দি পপুলার হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এ হাসপাতালের সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষে চলছে তিনটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এগুলো হলো এ্যাপলো, গ্রামীণ ও মেডিকেয়ার। এ ছাড়া ৫০ থেকে ১০০ গজ দূরে ওহি ডায়াগনস্টিক। স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকরা চিকিৎসায় দালালচক্রের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। শুধু চারঘাট নয়, জেলার সব উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আশপাশের চিত্র একই। প্রথমে সরকারি হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রোগী এলেও দালালচক্রের সদস্যরা নানান সুবিধার কথা বলে ওইসব ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করেন। ক্লিনিকে ভর্তির পর রোগীরা বুঝতে পারেন তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
সম্প্রতি রাজশাহীর তানোর উপজেলা হাসপাতালের পাশে গড়ে ওঠা মহানগর ক্লিনিকে অপচিকিৎসায় এক রোগীর কিডনির ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় ওই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এখানে অপচিকিৎসার শিকার রোগীর নাম রোজিনা খাতুন (৩৫)।
রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন থেকে চিকিৎসাসেবার মান বাড়াতে আন্দোলন করে আসছি। ক্লিনিকগুলো সরকারি হাসপাতালের কাছে থাকার কথা নয়। কিন্তু সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আশপাশে নিয়ম না মেনে বহু ক্লিনিক গড়ে উঠেছে। এর সঙ্গে আবার সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা জড়িত!’
রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন ডা. এস আই এম রাজিউল করিমকে পাওয়া যায়নি। তবে সিভিল সার্জন অফিসের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘অভিযোগ আছে। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’