অস্থিতিশীল অবস্থা কাটছে না হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানিতে। কখনো হঠাৎ করেই রপ্তানি ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। আবার পরের অর্থবছরেই তা তলানিতে ঠেকছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে খুলনাঞ্চলের সর্বোচ্চ রপ্তানির পর ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ধস নামে। আবার ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সে ধাক্কা কাটিয়ে ইতিবাচক ধারায় ফেরে চিংড়ি রপ্তানি। মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেন, বহির্বিশ্বে যুদ্ধ পরিস্থিতির স্থিতাবস্থা ও বাগদা-গলদা চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় গত কয়েক বছরের সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। তবে হঠাৎ রপ্তানি বৃদ্ধিকে ‘মন্দের ভালো’ বলে মন্তব্য করছেন রপ্তানিকারকরা। তাদের মতে, চাহিদামতো চিংড়ির উৎপাদন বাড়ছে না। ধারাবাহিক স্থিতিশীল অবস্থা না থাকায় রপ্তানিতে উত্থান-পতন ঘটছে। মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রন খুলনা দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে খুলনাঞ্চল থেকে ১৫ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন চিংড়ি রপ্তানি হয়। যার বাজার মূল্য ছিল ১৮৩৪ কোটি টাকা। যা পাঁচ অর্থবছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৯ হাজার ৯০৪ মেট্রিক টন চিংড়ি রপ্তানি হয়। যার বাজার মূল্য ২৬৭৫ কোটি টাকা। সর্বশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১৯ হাজার ৪৩৬ মেট্রিক টন চিংড়ি রপ্তানি হয়। যার বাজার মূল্য ২৫৩১ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রপ্তানি হয় ২৪ হাজার ১০৪ মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য ছিল ৩৭৪৬ কোটি টাকা। খুলনা মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রন কর্মকর্তা এ বি এম জাকারিয়া জানান, বহির্বিশ্বে যুদ্ধ পরিস্থিতির স্থিতাবস্থা ও চিংড়ির চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় কয়েক বছরের সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক থাকলেও গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ২৫ দশমিক ৭৯ শতাংশে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে।
তবে বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি তরিকুল ইসলাম জহির বলেন, বিগত দিনের তুলনায় রপ্তানি কিছুটা বেড়েছে যেটা মন্দের ভালো। তবে কাঁচামালের অভাবে চিংড়ি প্রক্রিয়াকরণ অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। পোনার সংকট আছে, ব্যাংক ঋণের হার বেশি, অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল- এসব কারণে রপ্তানিতে বাড়তি চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
এসিআই এগ্রোলিংক পরিচালক (বিজনেস) মো. ইশতিয়াক বলেন, যেসব মানদন্ডের কারণে রপ্তানির উত্থান-পতন হয় সেগুলো টেকসই স্থিতিশীল করতে হবে। এ বিষয়ে উদ্যোগ না নিলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে রপ্তানি বাড়বে আবার ধস নামবে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান বলেন, খুলনার বটিয়াঘাটা ও পাইকগাছায় বাণিজ্যিক ভেনামি চাষ শুরু হয়েছে। দেশে ব্যাপক হারে ভেনামি চাষ শুরু হলে এর রপ্তানির সম্ভাবনাও বাড়বে।