দিনভর আতঙ্ক ছড়িয়ে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট থেকে করোনা আক্রান্ত সেই রোগীকে পাঠানো হলো লক্ষীপুরে। রবিবার বিকালে ওই রোগীকে লক্ষীপুর পাঠানো হয়। এ নিয়ে প্রশাসনের সিদ্ধান্তহীনতাকে দায়ী করেন স্থানীয়রা।
সূত্র জানায়, বাড়ির মালিকের আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকিতে লক্ষ্মীপুর থেকে কুমিল্লায় আসেন ৩৫ বছরের করোনা আক্রান্ত এক ব্যক্তি। তিনি কক্সবাজারে ব্যাগের কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। আক্রান্ত ব্যক্তি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া গ্রামের বাসিন্দা।
লকডাউন হওয়ার পর চলে আসেন লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের ভাড়া বাসায়। করোনা পরীক্ষার ফলাফল পজেটিভ আসায় বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার চাপ দেন বাড়ির মালিক। এরপর চারৈর ট্রাকযোগে চলে আসেন লাকসাম। লাকসাম থেকে পায়ে হেঁটে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট রেলওয়ে স্টেশনে। শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে উদ্ধারের পর তাকে জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলার জোড্ডা পশ্চিম ইউনিয়নের গোহারুয়া পরিত্যক্ত হাসপাতালে প্রেরণ করে স্থানীয় প্রশাসন।
এদিকে তাকে গোহারুয়া পরিত্যক্ত হাসপাতালে প্রেরণ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠে। অনেকে মন্তব্য করেন, গোহারুয়া হাসপাতালটি নিজেই অসুস্থ। সেখানে করোনা আক্রান্ত রোগীকে পাঠানো হাস্যকর। এছাড়া জনবহুল এলাকায় রোগীর যাতায়াতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় সূত্র মতে, গোহারুয়ায় ১৩ বছর আগে নির্মিত ২০ শয্যার সরকারি হাসপাতালের বেহাল দশা। ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত হাসপাতালটিতে জনবল ও যন্ত্রপাতি সংকটে চিকিৎসাসেবা চালু নেই। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ডিজির পরিদর্শনের পরেও চিকিৎসা সেবার সুফল পায়নি তৃণমূলের মানুষ। এতে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট, মনোহরগঞ্জ ও নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী ও সেনবাগ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন।
এদিকে পরিত্যক্ত হাসপাতালে করোনা রোগীকে রাখা নিয়ে মোবাইল ফোনে কুমিল্লার সিভিল সার্জন, নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, 'পুলিশ সুপার মহোদয়ের কাছ থেকে বিষয়টি জেনে আমরা রেলস্টেশনে গিয়ে তাকে উদ্ধার করি। রবিবার বিকালে তাকে লক্ষ্মীপুর পাঠানো হয়েছে।'
বিডি প্রতিদিন/হিমেল