মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

মাদক ব্যবসায়ীকে ধরে বিপাকে গ্রামবাসী

কালিয়াকৈর প্রতিনিধি

মাদক ব্যবসায়ীকে ধরে বিপাকে গ্রামবাসী

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এক মাদক ব্যবসায়ীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ তার পরিবার ও গ্রামবাসী। তাকে ধরে পুলিশে দিতে গিয়ে বিপাকে পড়েন গ্রামবাসী। ৯৯৯-এ ফোনসহ উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশে জানিয়েও আইনি সহায়তা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আটাবহ ইউনিয়নের চাতৈলভিটি সোহাগীরটেক এলাকায় গত রবিবার রাতে। ওই মাদক ব্যবসায়ী হলেন- কালিয়াকৈর উপজেলার চাতৈলভিটি সোহাগীরটেক এলাকার মৃত আবদুর রাজ্জাকের ছেলে সোহাগ হোসেন (২৫)। ভুক্তভোগী পরিবার ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ১০-১২ বছরে আগে একটি দুর্ঘটনায় তার বাবা মারা যাওয়ার পর মাদকসেবনে জড়িয়ে পড়েন সোহাগ। এরপর মাদকসেবী ধীরে ধীরে তিনি মাদকব্যবসায়ী হয়ে ওঠেন। মাদকের টাকার জন্য কখনো বৃদ্ধ দাদা-দাদিকে বিভিন্ন সময় মারধর করেন ওই মাদকাসক্ত সোহাগ। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন সময় নিজেদের ঘরবাড়ি ভাঙচুরসহ আগুন জ্বালিয়ে দেন। শুধু তাই নয়, তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ নিরীহ পরিবার ও গ্রামবাসী। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গ্রামবাসী রবিবার রাত ৮টার দিকে ওই মাদকব্যবসায়ীকে আটক করে। পরে পরিবারের মতামতে তাকে আইনের হাতে সোপর্দের সিদ্ধান্ত নেন তার দাদাসহ গ্রামবাসী। এরপর গ্রামবাসী প্রথমে ৯৯৯-এ ফোন দিলে তাদের কালিয়াকৈর থানায় অভিযোগ দিতে বলা হয়। পরে থানায় ফোন দিলে ডিউটি অফিসার তাদের উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ফোনে ঘটনাটি জানানো হলে তিনি রাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা নিষেধ জানিয়ে থানায় যোগাযোগ করতে বলেন। এরপর গ্রামবাসী থানার ওসিকে ফোনে ঘটনাটি জানালে তিনি ওই মাদকাসক্ত যুবককে নিরাময় কেন্দ্রে নেওয়ার পরামর্শ দেন। এতে চরম বিপাকে পড়েন তার পরিবার, স্থানীয় মেম্বার নজরুল ইসলামসহ গ্রামবাসী।

 রাত ১২টা পর্যন্ত প্রশাসনের আইনি সহায়তা না পেয়ে ওই মাদকব্যবসায়ীকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন গ্রামবাসী। প্রশাসনের এমন নীরবতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার ও গ্রামবাসী। ওই যুবকের দাদা কলিম উদ্দিন ওরফে পি ত জানান, আমার নাতি সোহাগ দীর্ঘদিন ধরে মাদকের সঙ্গে জড়িত। মাদকাসক্ত হয়ে বিভিন্ন সময় আমাকেসহ পরিবারের সবাইকে মারধর করে। তিন-চার দিন আগে আমাদের ঘরে আগুনও লাগিয়ে দেয়। এলাকার মানুষ সবাই তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ। এ জন্য তাকে পুলিশে দিতে চেয়েছিলাম। স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম জানান, রাত ৮টার দিকে ওই মাদকাসক্ত যুবককে ধরে গ্রামবাসী। ৯৯৯-এ ফোন, উপজেলা প্রশাসনকে ফোন ও থানায় ফোন দিয়েও রাত ১২টা পর্যন্ত আইনি সহযোগিতা পায়নি। পরে বাধ্য হয়েই তাকে ছেড়ে চলে যায় গ্রামবাসী। কালিয়াকৈর থানার ওসি আকবর আলী খান গ্রামবাসীর ফোনের কথা অস্বীকার করে বলেন, যদি মাদকাসক্ত হয়ে থাকে তাহলে তাকে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করা হোক। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান, স্থানীয়রা বিষয়টি অবগত করলেও রাতে মোবাইল কোর্ট করার ব্যাপারে বিধিনিষেধ থাকায় মোবাইল কোর্ট করা হয়নি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর