কারও বয়স ৭০ বছর, কারও ৭৫। কারও মুখের বেশির ভাগ দাঁত নেই। মাথায় চুল নেই। কারও আবার চুল-দাড়ি সাদা হয়ে গেছে। চামড়ায় বয়সের ভাঁজ। কেউ পেশায় ব্যবসায়ী, কেউ ব্যাংকার বা চিকিৎসক। তারা নানা-নানি হয়েছেন অনেক আগে। বয়স তাদের বন্ধুত্ব আর আনন্দ-উৎসবে বাধা হতে পারেনি। একসঙ্গে নেচেছেন, গান গেয়েছেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বন্ধুদের কাছে পেয়ে সবাই ফিরে যান শৈশবে। করেন স্মৃতিচারণ। কুমিল্লা মডার্ন প্রাইমারি স্কুল অ্যালামনাইয়ের বৈশাখী উৎসব ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে গতকাল এ দৃশ্য চোখে পড়ে। উৎসব উপলক্ষে এ দিনে স্কুল আঙিনায় বসে আনন্দের হাট।
দেখা যায়, পুরুষরা লাল উত্তরীয় গলায় আর নারীরা ফুলের টায়রা মাথায় লাগিয়ে ঘুরছেন আড্ডা দিচ্ছেন। নিজেদের হারিয়ে যাওয়া দিনের স্মৃতিচারণ করছেন। দই, চিড়া, বাতাসা, কাঁচা আমের জুসসহ খাবারের নানা আয়োজনের পসরা সাজানো। কেউ ছবি তুলছেন। ঘাসেই বসে পড়েছেন কেউ কেউ।
কুমিল্লা মডার্ন স্কুল অ্যালামনাইয়ের অর্থ সম্পাদক ৭৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী তারিকুল ইসলাম মজুমদার বলেন, এখানে এসে মনে হচ্ছে তিনি ক্লাস থ্রি-ফোরের ছাত্র। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়ে অনেক ভালো লাগছে। কমিটির সহসভাপতি দিলনাশি মোহসেন বলেন, তিনি ৬৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী। তার মেয়েও এই স্কুলের ছাত্রী। এখানে এসে তিনি অতীতে ফিরে গেছেন। কমিটির উপদেষ্টা ৬২ ব্যাচের জামিল আহমেদ, ৬৭ ব্যাচের শাহ মোহাম্মদ সেলিম, কুমিল্লা অঞ্চলের সমন্বয়কারী ৬৭ ব্যাচের মোবারক হোসেন সেলিম, ঢাকা অঞ্চলের সমন্বয়কারী ৭২ ব্যাচের কাজী ফখরুল আলম বলেন, স্কুলটি ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত। এটি দেশের সেরা স্কুলের মধ্যে একটি। ১৯৬২ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত আমরা ১০ বছর আগে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন করি। অনুষ্ঠানে কুমিল্লা ছাড়াও বিভিন্ন জেলা থেকে বন্ধুরা এসেছেন। সবাই আনন্দ করেছেন। কমিটির সভাপতি ৬৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী কাজী মমতাজ হক ও সাধারণ সম্পাদক ৭০ ব্যাচের জাহাঙ্গীর কবির আপেল বলেন, এখানে এসে বিভিন্ন ব্যাচের বন্ধুরা স্কুল পালানো, সিনেমা দেখাসহ নানা স্মৃতিচারণ করেছেন। ভবিষ্যতে আমরা বিভিন্ন সামজিক উদ্যোগ গ্রহণ করব।