ভূমিহীন ও অতিদরিদ্র পরিবারে জন্ম নাজমুল হাসানের (২৩)। বসবাস করতেন দাদির ভিটায়। বাবাকে হারিয়ে হাল ধরেন সংসারের। জীবিকার তাগিদে কাজ নেন পোশাক কারখানায়। স্বপ্ন দেখতেন বসতভিটার জন্য কয়েক শতক জমি কেনার। সেখানে সুখে-শান্তিতে থাকবেন মা গোলেভান বেওয়াকে নিয়ে। নাজমুল হাসানের সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি। ’২৪-এর গণ অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়েন নাজমুলও। আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন তিনি। তাঁর মতো বহু শহীদের রক্তের বিনিময়ে দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হলেও আজও কান্না থামেনি নাজমুলের মায়ের। মাথা গোঁজারও ঠাঁই নেই গোলেভান বেওয়ার। অন্যের জায়গায় কোনোমতে বসবাস করেন। রাষ্ট্র কিংবা কোনো দানশীল ব্যক্তির কাছে একটি বসতভিটার আকুতি জানিয়েছেন শহীদ নাজমুলের মা। নাজমুল হাসানের ভগ্নিপতি আবদুল মজিদ মিয়া বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গিয়ে ভাইটির মৃত্যুর পর শাশুড়ি তাঁর অস্থায়ী বাড়িতে একা হয়ে পড়েন। তাঁকে কিছুটা সহযোগিতা করতে তখন থেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে এ বাড়িতে থাকছি।’ গোলেভান বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, বসতভিটা নেই। দাদিশাশুড়ি রাহেলা বেওয়ার জায়গায় টিন শেড ঘর তুলে বসবাস করছি। স্বামী অনেক দিন আগে মারা গেছেন। একমাত্র ছেলে নাজমুল গার্মেন্টে চাকরি নিয়ে আমাকে দেখাশোনা করছিল। শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে গিয়ে মারা গেছে সে।’
গোলেভান বেগম আরও বলেন, ‘শুনেছি সরকার নাকি শহীদদের জন্য ভাতা দেবে। তা কখন পাব জানি না। সেই সঙ্গে আমার বিধবা ভাতাও দাবি করছি। কেউ সাহায্য করলে সামান্য জমি কিনে বাড়ি করতাম।’ গাইবান্ধা জুলাই যোদ্ধা-২৪ সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তার পাশে আছি।’