ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নে আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মামলার আসামী লিয়াকত আলীর পুত্র সহিদুল হাসান সোহাগকে ইউপি নির্বাচনে আ.লীগ মনোনীত প্রার্থী করায় এলাকাজুড়ে তোলপাড় চলছে।
এ ঘটনায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। 'রাজাকার পুত্রের' মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে আটঘর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ফুঁসে উঠেছে। সোহাগ খানের মনোনয়ন বাতিল করে ত্যাগী ব্যক্তিকে 'নৌকা' প্রতীক দেবার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানাগেছে, সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের লিয়াকত আলী খান ও তার পিতা গোলাম আলী খান পিস কমিটির নেতা ছিলেন। যুদ্ধকালীন সময়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের অন্যতম সহযোগী ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পিতা-পুত্র মিলে সালথা উপজেলার গোয়ালপাড়া, জয়কালী, মাঝিপাড়াসহ বিভিন্ন গ্রামে ব্যাপক লুটতরাজ, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ সংখ্যালঘুদের ধর্মান্তর এবং ধরে নিয়ে হত্যা করে। ৭১ সালের ১০ এপ্রিল রনকাইল গ্রামের মাঝিপাড়ায় তুষ্ট মাঝি ও অনিল মাঝিকে গুলি করে হত্যা করে। নিহত তুষ্ট রাজবংসীর ছেলে নির্মল রাজবংসী এ বছরের ১৬ ফেব্রয়ারি ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং- ২৭৮। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানাগেছে। কয়েকমাস আগে রাজাকার লিয়াকত আলী খানের ফাঁসি দাবি করে স্থানীয় হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ মিছিল করেছিল।
এদিকে, রাজাকার পুত্র সোহাগ খানের মনোনয়ন বাতিলসহ নির্বাচন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ করতে সংবাদ সম্মেলন করেছে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ আলীমুজ্জামান। সোমবার ফরিদপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আলীমুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, যারা মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সেই পরিবারের সন্তানকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়ায় দলের মধ্যে তোলপাড় চলছে। এছাড়া সেই রাজাকারের পুত্রকে নির্বাচনে বিজয়ী করে আনার নীলনকশাও করা হয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, যেখানে মানবতা বিরোধী অপরাধীদের শাস্তি হচ্ছে, সেখানে রাজাকার পুত্রকে যারা নৌকার হাল ধরার দায়িত্ব দিয়েছেন তাদের বিচার করতে হবে এবং আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করতে হবে। তিনি বলেন, দলের প্রভাবশালী একনেতা মনোনয়ন বানিজ্য করে রাজাকার পুত্র সোহাগ খানকে মনোনয়ন দেয়ায় আওয়ামী লীগ ও মানবতা বিরোধী অপরাধীদের বিচারের বিষয়টি প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী সহিদুল হাসান সোহাগের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৬ মে ১৬/ সালাহ উদ্দীন