কোরবানি ঈদে প্রচুর পশু জবাই করা হয়। এ পশু জবাই থেকে শুরু করে মাংস কাটা পর্যন্ত প্রচুর দা, বটি, চাপাতি ও ছুরির প্রয়োজন হয়। আর এসবের যোগান আসে মূলত কামারদের কাছ থেকে। কোরবানি ঈদে নতুন ছুরি তৈরি ও ধার দেয়ার কাজও বেড়ে যায় কয়েকগুণ। তাই ঈদকে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইলে কামাররা সম্প্রদায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
অন্যান্য সময়ের তুলনায় এখন তাদের কাজের চাপ অনেক বেশি। দিনরাত সমানতালে কাজ করছেন তারা। তবে কাজের চাপ বেশি থাকলেও তারা খুশি। কারণ ঈদ ছাড়া বাকি দিনগুলোতে তাদের বেচা-কেনা থাকে না বললেই চলে। সারা বছর প্রতিদিন গড়ে তাদের ৫০০ টাকার পণ্য বিক্রি হয়। কোনো কোনো দিন কিছুই বিক্রি হয় না। ঈদে অন্য সময়ের তুলনায় বিক্রির পরিমাণ কয়েকগুণ বেশি। তাই আয়ও বেশি হচ্ছে তাদের।
টাঙ্গাইল শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কেউ তৈরি করছে দা, কেউ বা তৈরি করছে চাপাতি আবার কেউ কেউ ছুরি। আর এ সব জিনিস সারিবদ্ধভাবে দোকানের সামনে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। কামারশালাগুলোতে চাপাতি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকায়, দা ৩০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকায়, চাকু ৫০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা, খুন্তি ২৫ টাকা, হাতা ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কথা হয় পার্কবাজারের কমল চন্দ্র করের সাথে। তিনি বলেন, আমি প্রায় ২০ বছর ধরে এ পেশায় নিয়োজিত। ঈদকে কেন্দ্র করে এখন ব্যস্ত সময় যাচ্ছে আমার। আগে প্রতিদিন যেখানে ৪০০ টাকার পণ্যও বিক্রি হতো না, এখন ১৫০০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকাও আয় করছি।
রঞ্জিত কর্মকার বলেন, সরকারের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা পেলে আমাদের এ ব্যবসা আরো এগিয়ে যেতো। মহাজনদের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে সুদ দিতে হয় বেশি। এ কাজে কয়লার প্রচুর চাহিদা। বর্তমানে কয়লা পাওয়া খুবই কঠিন। আর কয়লার দামও বেশি। পাশাপাশি লোহার দামও বেশি। সরকার এসব জিনিসের দাম কমালে অনেক উপকৃত হতাম।
রঞ্জিত কর্মকার জানান, এবার ঈদে তার ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা বিক্রি হবে বলে আশা করছেন।
কথা হয় আরেক ব্যবসায়ী জুুুুলু চন্দ্রের সাথে। তিনি বলেন, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে আমাদের এ ব্যবসা এখন খুব ভালো চলছে। আগে প্রতিদিন ৫০০ টাকা বিক্রি হতো, এখন প্রতিদিন তিন হাজার টাকার পণ্য বিক্রি হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে এক লাখ টাকার পুঁজি খাটিয়েছি। আশা করছি, ২০ হাজার টাকা লাভ করতে পারবো।
বিডি-প্রতিদিন/০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/ফারজানা