দিনাজপুরের খোকন। অনার্সের ছাত্র। প্রয়োজনের তাগিদেই লেখাপড়ার পাশাপাশি কিছু বাড়তি আয়ের চিন্তা করছিলেন বেশ কিছুদিন ধরে। কিন্তু অন্যের দ্বারে দ্বারে চাকরির জন্য ঘুরতে নারাজ তিনি। অনেক ভেবে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন নার্সারি করবেন। যেমন চিন্তা, তেমন কাজ। প্রায় ৩ বছর আগে নিজের দেড় একর জায়গায় ‘বকুল নার্সারী’ নামে এ নার্সারী গড়ে তোলেন। খোকন এখন শুধু স্বাবলম্বীই নয়, তার নার্সারিতে আরও ১০/১১জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। ওই নার্সারি থেকে প্রতি মাসে খরচ বাদ দিয়ে তার লক্ষাধিক টাকা আয় হয় বলে জানান খালেকুজ্জামান খোকন।
অনার্সের ছাত্র হয়েও নার্সারি ব্যবসায় জড়িয়ে তিনি তার সংসারের চাকার গতিপথ পরিবর্তন করে ফেলেছেন। আর এ নার্সারি ব্যবসায় সার্বক্ষনিক সহায়তা করেন তার বাবা রুস্তম আলী। নার্সারি করে স্বাবলম্বী হওয়ায় তাকে অনুকরনীয় মডেল করেছেন অনেক তরুণ-যুবক।
দিনাজপুরের পার্বতীপুরের হাবড়া ইউপির রজনীগন্ধা মোড় এলাকায় খোকনের নার্সারি। গাছের চারা তৈরি করেন। ফোটান ফুল। সেগুলো বিক্রি করে আসে অর্থ। নার্সারিতে কাজ করে মনের ক্ষুধাও মেটে বলে জানান খোকন। তার মতে প্রতিটা গাছকে পরিবারের সদস্য বলে মনে হয়।
প্রায় ৩ বছর আগে নিজের দেড় একর জায়গায় গড়ে তোলা ‘বকুল নার্সারী’ এখন ৬ একর জমিতে। ভাড়া নিয়েছেন অন্যের জমি। নার্সারীতে ফলজ, বনজ, ঔষধী, ফুল ও বিদেশি শোভাবর্ধক গাছের চারা উৎপাদন করে বিক্রি করেন খোকন।
খালেকুজ্জামান খোকন জানান, ৩বছর পূর্বে বাবা রুস্তম আলীর সহযোগিতায় নার্সারি গড়ে তোলা হয়। প্রতি মাসে কমপক্ষে লাখ টাকা লাভ হয়। তবে আম-লিচুর মওসুমে লাভের পরিমান বেশি হয়। আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারা, জাম্বুরা, জলপাই ইত্যাদি ফলজ চারা উৎপাদনের পাশা-পাশি গোলাপ, বেলি, রজনীগন্ধা, রঙন, সেলভিয়া, সূর্যমূখী, স্টার, হাসনা হেনা, বেলিসহ নানা প্রজাতির ফুলের চারা, লেটুস, ঘৃতকুমারীসহ বিভিন্ন চারা উৎপাদন করে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করা হয়। এখানের বেশিরভাগ গাছই পাইকারি বিক্রি করা হয়।
খোকন জানান, তার নার্সারি থেকে গাছ কিনে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে অনেক পরিবার জীবিকা নির্বাহ করে।
খোকনের বাবা রুস্তম আলী জানান, অনার্স পড়ুয়া তার ছেলে খোকন ছোট থেকে গাছের প্রতি যত্নবান। ছোট করে নার্সারি করার পরে তার শ্রমসাধনায় এটি উপজেলার জনপ্রিয় নার্সারিতে রূপান্তরিত হয়েছে। যা দ্বারা তাদের পরিবারের দারিদ্র বিমোচিত হওয়ার পরেও ১০/১১জন মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ