ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের মস্টারবাড়ী এলাকায় ট্রাক লেগুনার সংঘর্ষে তিন কলেজ ছাত্রীসহ পাঁচ জন নিহত এবং ৭জন আহত হয়েছে। হতাহতদের সকলেই লেগুনার যাত্রী। নিহতদের মধ্যে তিনজনের নাম জানা গেছে।
তারা হলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পোড়াবাড়ি এলাকার গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে খাদিজা আক্তার, ভাওরাইদ (মাস্টারবাড়ি) এলাকার ফরহাদ হোসেনের মেয়ে ফারজানা আক্তার শিখা ও একই গ্রামের মো. শাহ জামালের মেয়ে সাদিয়া আফরিন রিমি। নিহত তিনজনই গাজীপুর সদর উপজেলার রাজেন্দ্রপুর এলাকার ইকবাল সিদ্দিকী কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তারা কলেজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। নিহত অপর দুইজনের মধ্যে একজন লেগুনা চালক ও অজ্ঞাত এক পুরুষ যাত্রী রয়েছে। এদিকে একইদিন অপর দু’টি পৃথক দুর্ঘটনায় এক গ্যারেজ কর্মচারীসহ দুইজন নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছে।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে একটি যাত্রীবাহি লেগুনা ১০/১২ জন যাত্রী নিয়ে চান্দনা চৌরাস্তার দিতে আসছিল।
এসময় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মাস্টারবাড়ী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রাস্তার পাশে পার্ক করা একটি কাভার্ডভানের পেছনে লেগুনাটি ধাক্কা লাগলে লেগুনাটি ধুমড়ে মুচড়ে যায়। এসময় ঘটনাস্থলে তিন কলেজছাত্রীসহ ৪জন নিহত এবং অপর ৮ জন আহত হয়। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে একজনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে তিনজন গাজীপুর সদর উপজেলার রাজেন্দ্রপুরের ইকবাল সিদ্দিকী কলেজের ছাত্রী। কলেজের অধ্যক্ষ ইকবাল সিদ্দিকী জানান, কলেজ ছুটির পর আমাদের চার ছাত্রী অন্য যাত্রীদের সাথে লেগুনায় চড়ে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। দুর্ঘটনায় কলেজের তিন ছাত্রী খাদিজা আক্তার, ফারজানা আক্তার শিখা ও সাদিয়া আফরিন রিমি মারা যায় এবং গুরুতর আহত সিরাজুম মনিরা কনাকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হতাহতরা সকলেই কলেজের একাদশ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিল।
আহতরা অন্যরা হলেন, রাজেন্দ্রপুর এলাকার শরিফ (২২), খাইলকুর এলাকার রেজাউল, সালানা এলাকার গিয়াস উদ্দিন, জয়দেবপুরের ছায়াতরু এলাকার শহীদুল (২৪), জয়দেবপুর এলাকার মামুন ও অজ্ঞাতনামা একজন। আহতদের উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এদিকে একইদিন সকালে মুরগীর খাঁচাবাহী পিক-আপ চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পোড়াবাড়ি এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে থাকা বিদ্যুতের খুটির সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে পিকআপের উপর থেকে মহাসড়কে পড়ে ঘটনাস্থলেই হেলপার শাহ আলম নিহত এবং ও সালাউদ্দিন (২৪) আহত হন। পরে হতাহতদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া জয়দেবপুর থানার চক্রবর্তী পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মোঃ হারুন অর রশীদ জানান, ঢাকার আশুলিয়া থানা এলাকার নরসিংহপুরের ইউসুফ মার্কেটের ফখরুল ইসলামের গ্যারেজে একটি প্রাইভেটকার মেরামত করা হয়। পরে পরীক্ষা করার (ট্রায়াল) জন্য কারটিকে নিয়ে আরাফাত, জুয়েল ও বাবু মিয়া নামের তিন কর্মচারী সোমবার সকালে ওই গ্যারেজ থেকে বের হয়। তারা পার্শ্ববর্তী গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কাশিমপুর সড়ক পথে চালিয়ে যাওয়ার সময় কাশিমপুরের সুরাবাড়ি ব্রীজ এলাকায় পৌঁছলে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এতে প্রাইভেটকারটি আরোহীসহ সড়কের পাশে খাদে পড়ে পানিতে ডুবে যায়। এলাকাবাসী এগিয়ে এসে তাৎক্ষনিকভাবে দু’জনকে আহতাবস্থায় ওই গাড়ি থেকে উদ্ধার করতে পারলেও অপর আরোহী ওই গ্যারেজের হেলপার আরাফাতের খোঁজ পায়নি। প্রায় পৌণে এক ঘন্টা তল্লাশির পর পানির নীচে গাড়ীতে আটকে থাকা আরাফাতকে উদ্ধার করে। তাদেরকে স্থানীয় জামগড়া নারী ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আরাফাতকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত আরাফাত হোসেন (২০) গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের টঙ্গীর মন্নুনগর এলাকার আব্দুর রবের ছেলে।
বিডি প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন