অসংখ্য বোমা মেশিন ধ্বংস ও ভ্রাম্যমাণ আদালতে জেলা জরিমানা করেও বালু দস্যুদের কাছ থেকে কিছুতেই রক্ষা হচ্ছে না তিস্তা নদী ও নদীর তীর বাঁধসহ সলেডি স্প্যার। যার কারণে বর্ষা শুরুর আগেই ভাঙনের কবলে পড়ে গৃহহীন হওয়ার আশংকা করছেন তিস্তা পাড়ের হাজারো মানুষ। প্রভাবশালী বালু দস্যুদের কাছে অনেকটাই নিরুপায় স্থানীয় প্রশাসন। তিস্তা নদী থেকে অবৈধ ভাবে বোমা মেশিনে বালু উত্তোলন করায় ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সলেডি স্প্যার বাঁধ।
জানা গেছে, তিস্তা নদীর অব্যাহত ভাঙন ও বন্যায় ফসল রক্ষায় নদীর বাম তীরে বিগত বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে লালমনিরহাটে কয়েকশ’ কোটি টাকা ব্যয়ে তিনটি সলেডি স্প্যার বাঁধ নির্মাণ করে সরকার। যার ফলে ভাঙন ও বন্যা থেকে রক্ষা পায় সদর ও আদিতমারী উপজেলার নদী তীরবর্তী মানুষ। তিস্তা নদী থেকে শুস্ক মৌসুমে ট্রাকে ও বর্ষায় বোমা মেশিনে বালু উত্তোলন করায় এসব বাঁধ ঝুঁকিতে পড়ে। যার ফলে প্রতি বছর সরকারিভাবে লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে বাঁধগুলো সংস্কার করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
এরপরেও থেমে নেই বালু দস্যুদের তান্ডব। প্রতি মাসেই ভ্রাম্যমাণ আদালতে এসব মেশিন ধ্বংসসহ মালিকদের জেল জরিমানা তাদের আগ্রাসন থেকে তিস্তা নদীকে রক্ষা করতে পারছে না জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। ফলে বাঁধসহ নদী ভাঙনের প্রকোপ দিন দিন বেড়েই চলছে। বর্ষার আসার আগেই ভাঙন শুরু হয়েছে তিস্তার তীরে।
গত সপ্তাহে আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের চন্ডিমারী গ্রামের আমিনুর ও মমিনুর রহমানসহ ৫/৬টি বাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে শত শত বসত ভিটা ও ফসলি জমি। নিজেদের ফসল ও জীবন বাঁচাতে নিজেদের উদ্যোগেও বালুর বাঁধ নির্মান করেছেন গোবর্দ্ধন গ্রামের হাজারো মানুষ।
চন্ডিমারী গ্রামে নির্মিত সলেডি স্প্যার বাঁধ এক এর প্রায় একশ’ গজ ভাটিতে বোমা মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে একটি প্রভাবশালী মহল। যাকে উপজেলা প্রশাসন একাধিক বার সতর্ক করলেও বন্ধ হয়নি বোমা মেশিন। ফলে সলেডি স্প্যার বাঁধ আসন্ন বর্ষায় তিস্তায় বিলিন হওয়ার আশংকায় শঙ্কিত স্থানীয়রা।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন বলেন, গত সপ্তাহে সলেডি স্প্যার বাঁধ এক এর পাশে একটি মেশিন ধ্বংস করেছি। দুইটি মেশিনকে সতর্ক করা হয়েছে। সতর্ক করার পরেও চালু হওয়া মেশিনের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে। উপজেলার কোথাও বোমা মেশিনে বালু উত্তোলনের সুযোগ দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিষয়টি তিনি জেনেছেন। উপজেলা নিবার্হী অফিসারকে নদী ও বাঁধ রক্ষায় ব্যবস্থা গ্রহনের নিদের্শ দেওয়া হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল