এবার ঈদ উৎবের রঙ লাগেনি পাহাড়ে। করোনার কালো ছায়ায় ম্লান হয়েছে সব আনন্দ উল্লাস। শঙ্কার মেঘ যেন কাটছে না পাহাড়ে। করোনার সংক্রমণের ভয়ে এখনও স্থবির পাহাড়। এরই মধ্যে বন্ধ করা হয়েছে পার্বত্যাঞ্চলের সব প্রবেশমুখ। কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু তারপরও পাহাড়ের দরিদ্র জনগোষ্ঠীদের মুখে হাসি ফুটাতে থেমে নেই সেনাবাহিনীর নানা উদ্যোগ।
কখনো এক মিনিটের সবজি বাজার আবার কখনো ঈদ বাজার। পৃথক পৃথকভাবে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে আয়োজন করা হচ্ছে শুধু পাহাড়ের সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীদের জন্য। শুধু তাই নয় সেনা সদস্যরা এখনো দূর্গম পাহাড়ের বাসিন্দারে জন্য পৌঁছে দিচ্ছে ঘরে ঘরে ত্রাণ সামগ্রী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকালে রাঙামাটি মারী স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমানের নির্দেশে আয়োজন করা হয় এক মিনিটের বিনা মূল্যের ঈদ বাজার। এ বাজারের উদ্বোধন করেন, রাঙামাটি সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ইফতেকুর রহমান।
একইভাবে খাগড়াছড়ি গুইমারা কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজন করা হয় এ ঈদ বাজার। এ বাজারের উদ্বোধন করেন, খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা সেনাবাহিনীর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শাহরিয়ার জামান।
এছাড়া বান্দরবান জেলা স্টেডিয়ামেও আয়োজন করা হয় এ ঈদ বাজার। এ বাজারের উদ্বোধন করেন, বান্দরবান সেনাবাহিনীর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রিজিয়নের খন্দকার মো. শহীদুল এমরান।
সুবিধাভোগীরা জানান, সেনাবাহিনীর নামে এক মিনিটের বাজার হলেও এ বাজার থেকে প্রতিবন্ধী, অসহায় ও দুস্থদের এক মিনিটের মধ্যে ১৫ প্রকার দ্রব্য সামগ্রী প্রদান করা হয় বিনামূল্যে। যার মধ্যে ভোগ্য পন্য হিসেবে ছিল নিত্য প্রয়োজনীয় চাল, আলু, তেল, চিনি, ডাল, লবন, সেমাই গুড়াদুধ, সুবজি, নুডলস, আটা ও মিষ্টি কুমড়াসহ নানা সামগ্রী। শুধু তাই নয় ঈদ দিন যাতে দরিদ্র মানুষগুলো নতুন জামা কাপড় পড়তে পারে তার জন্য ছিল নানা ব্যবস্থা। টেবিলে টেবিলে সাজানো ছিল শাড়ি, লুঙ্গি ও থামি।
সেনাবাহিনী সূত্রে জানা যায়, অসহায়, প্রতিবন্ধী ও দুস্থ ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করে প্রত্যেকের কাছে একটি করে টোকেন প্রদান করা হয়। আর এই টোকেন দেখিয়েই প্রতিটি পরিবার এক মিনিটের ঈদ বাজার থেকে সংগ্রহ করেন তাদের প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী। সেনাবাহিনী সুশৃঙ্খলভাবে আয়োজিত এই ব্যতিক্রমি বাজারে বিনামূল্যে বাজার করার সুযোগ পেয়ে আনন্দিত অসহায়-দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দুস্থ মানুষদের জন্য এ সেবামূলক কর্মসূচি ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম