করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারি নির্দেশে চলতি বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। দীর্ঘ দিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় লেখাপড়ায় মন বসছে না শিক্ষার্থীদের। বিদ্যালয় বন্ধ থাকার এই সুযোগে ঠাকুরগাঁওয়ের অনেক শিশু শিক্ষার্থী এখন টাকার অভাবে পাট ধোয়ার কাজ করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে প্রচণ্ড রোদে পাট ধোয়ার কাজে ব্যস্ত একদল শিশু শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থী সাকিব জানায়, স্কুল বন্ধ থাকায় পাট ধোয়ার কাজ করছে। প্রতিদিন কাজ করে ২০০-৩০০ টাকা পায় সে। আর এই টাকা বাবা-মাকে দেয় সাকিব। আরেক শিশু শিক্ষার্থী বেলাল জানায়, তাদের মতো অনেকেই রোদে পাট ধোয়ার কাজ করছে।
জানা যায়, গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাধারণ ছুটিতে রয়েছে। দফায় দফায় সে ছুটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এরপরও স্কুল খুলবে কি না, সেই নিশ্চয়তাও নেই। তবে বন্ধের এই সময় শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সংসদ টিভির মাধ্যমে অনলাইনে ক্লাস পরিচালনা করছে সরকার। একই সাথে দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজও আলাদাভাবে অনলাইনে ক্লাস চালু করেছে।
তবে এসবের কোনো কিছুই প্রভাব ফেলছে না ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের। বরং অবসরের এই সময়ে শিক্ষার্থীরা অভাবের তাড়নায় টাকা রোজগারে শ্রম বিক্রি করে পাট ধোয়ার কাজ করছে।
সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংসদ টিভি ছাড়াও কিশোর বাতায়ন নামে একটি ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
জেলা কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৯৬০ হেক্টর। পাট আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ৮১২ হেক্টর। গত বছরে পাট চাষ হয়েছিল ৫ হাজার ৮৬০ হেক্টর। আর ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় পাট চাষ হয়েছে ১ হাজার ২২২ হেক্টর জমিতে।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় পাট চাষ হয়েছে ১ হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে। রানীসংকৈল উপজেলায় পাট চাষ হয়েছে ১ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে। এছাড়া পীরগঞ্জ উপজেলায় পাট চাষ হয়েছে ১ হাজার হেক্টর জমিতে। হরিপুর উপজেলায় পাট চাষ হয়েছে ৮৮০ হেক্টর জমিতে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই