বিগত কয়েক বছর যাবত সরকারি খাদ্য গুদামে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ কৃষকদের লাভবান করেছে। সেবা সহজিকরণ ও ধান সংগ্রহে অনিয়ম রোধ করতে পাইলট প্রকল্প হিসেবে খাদ্য অধিদপ্তর গত আমন মৌসুমে দেশের ১৬ জেলার ১৬টি সদর উপজেলায় কৃষকের অ্যাপের মাধ্যমে আমন ধান সংগ্রহ করেছে।
তারপর অ্যাপের মাধ্যমে সরকার বেশ কিছু উপজেলায় বোরো ধান সংগ্রহ করে। শেরপুর সদর উপজেলা গত বোরো সংগ্রহ মৌসুমে কৃষকের অ্যাপের মাধ্যমে সফলতা অর্জন করে, তারই ধারাবাহিকতায় এবার আমন মৌসুমে শেরপুর জেলার সব কটি উপজেলাতেই (৫টি উপজেলাতে) কৃষকের অ্যাপের মাধ্যমে ধান কিনবে জেলা খাদ্য বিভাগ। কৃষকের অ্যাপসের মাধ্যমে খাদ্য অধিদপ্তর এই মৌসুমে দেশের ৬৪ জেলার ৭৯টি উপজেলাতে ধান কিনবে।
নিবন্ধন পদ্ধতি: শেরপুর জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্র জানিয়েছে গুগল প্লে-স্টোর থেকে ‘কৃষকের অ্যাপ’ ডাউনলোড করে এই অ্যাপের মাধ্যমে ধান বিক্রির জন্য কৃষক নিবন্ধন করতে পারবেন। নিবন্ধনের জন্য কৃষকের এনআইডি নম্বর, জন্মতারিখ ও মোবাইল নম্বর প্রয়োজন হবে। এখন থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধন করা যাবে।
প্রথমবার কৃষকের নিবন্ধনই আবেদন বলে গণ্য হবে। তবে ২য় বার আর নিবন্ধন করার প্রয়োজন নেই। প্রথমবারের প্রদত্ত আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে শুধু সংশ্লিষ্ট মৌসুমে ধান বিক্রয়ের জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করলেই হবে। কৃষক আবেদন করার পর আবেদনটি কি অবস্থায় আছে, সেটাও এই অ্যাপের মাধ্যমে জানতে পারবেন।
প্রথমে কৃষকগণ নিবন্ধন করবেন যা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অনুমোদনের প্রেক্ষিতে আবেদন হিসেবে গণ্য হবে। অনুমোদিত আবেদনগুলো ডিজিটাল পদ্ধতিতে লটারির জন্য নির্বাচিত হবে। লটারিতে নির্বাচিত হলে কৃষক সংশ্লিষ্ট গুদামে ধান দিতে পারবেন। নির্বাচিত কৃষক কি পরিমাণ ধান, কোন তারিখে দিবেন তা ওই অ্যাপের মাধ্যমে ও মোবাইলে মেসেজে জানতে পারবেন। খাদ্য গুদামে ধান গৃহীত হলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অবিলম্বে চেক ইস্যু করবেন এবং একইদিনে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক উক্ত চেকে অনুমোদন দিলে, কৃষক তার ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে ধানের মূল্য পাবেন।
আবেদন করার জন্য কৃষক সংশ্লিষ্ট উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (বিএস), ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা (ইউডিসি), উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের সহায়তা নিতে পারবেন। এছাড়াও শেরপুর জেলা খাদ্য বিভাগ নিবন্ধনে সহযোগিতার জন্য উপজেলা ভিত্তিক কল সেন্টার চালু করেছে। কৃষক নিজে বা যে কোন ব্যক্তির সহায়তায় নিবন্ধন করতে পারবেন।
তবে নিবন্ধনে দেয়া পাসওয়ার্ডটি মনে রাখতে হবে। তবে পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে অ্যাপের মাধ্যমে নতুন পাসওয়ার্ড পাওয়া যাবে। কৃষকের নিজের মোবাইল নাম্বার না থাকলে পরিবারের কারও মোবাইল ব্যবহার করার জন্য পরামর্শ দিয়েছে খাদ্য বিভাগ।
এই ব্যাপারে শেরপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ফরহাদ খন্দকার বলেছেন, কৃষক হয়রানি মুক্তভাবে ঘরে বসে সহজে ধান বিক্রির জন্য আবেদন করতে এবং সকল তথ্য পেতে পারেন সেজন্যই সরকার কৃষকের অ্যাপে ধান ক্রয় শুরু করেছে। এটি খাদ্যশস্য সংগ্রহ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে কৃষকের সম্পর্ক নিবিড় করবে। জেলার সকল কৃষকদের নিবন্ধন ও ধান বিক্রয়ে সকলকে সহযোগিতা করার জন্য আমরা সদা প্রস্তুত আছি।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর