নওগাঁর আত্রাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী গোলাম মোস্তফা বাদল (৫৮) ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন। ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। আটক ব্যক্তির নাম শামীম হোসেন ওরফে সানী। তার বাড়ি নাটোর জেলার নলডাঙ্গা উপজেলায়।
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলা সদরের সাহেবগঞ্জ রেলস্টেশন এলাকায় নওগাঁ-৬ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ওমর ফারুক সুমনের পক্ষে প্রচার কার্যক্রম চালানোর সময় তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। আহত গোলাম মোস্তফা স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ওমর ফারুকের নির্বাচনী সমন্বয়কের দায়িত্বে রয়েছেন। তার ওপর হামলার ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ ও বিজিবি টহল দিচ্ছে।
আত্রাই থানার ওসি জহুরুল ইসলাম জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোস্তফা বাদল সাহেবগঞ্জ বাজারে অবস্থান করছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেল নিয়ে কয়েকজন দুবৃর্ত্ত পেছন থেকে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তার পিঠে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন শামীম হোসেন নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। আহত গোলাম মোস্তফাকে আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা জানান, শীতের পোশাক থাকায় চাকু দুই ইঞ্চির মত গভীরে গেছে। তবে আর একটু নিচে চাকু মারলে ফুসফুসের বড় ক্ষতি হতো।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চৌধুরী গোলাম মোস্তফা বাদল বলেন, নির্বাচনী ক্যাম্পে যাবার উদ্দেশে সাহেবগঞ্জ বাজারে চা খেয়ে মোটরসাইকেলে উঠছিলাম। এমন সময় পিছন হতে পিঠে চাকু মারলে চিৎকার দেওয়ামাত্র সাহেবগঞ্জ গ্রামের ভোদন এবং আটককৃত শামিম হোসেন দৌড়ে পালায়। মোটরসাইকেলের চালক সাজেদুল ইসলাম সেন্টু জানান, বাদল চাচা চিৎকার দেওয়ামাত্র ঘটনাকারী দৌড় দিলে মোটরসাইকেল রেখে চাচার পিঠ থেকে চাকু টেনে বের করে হাসপাতালে নিয়ে আসি।
এ আসনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন হেলাল। স্বতন্ত্র প্রার্থী ওমর ফারুক সুমন বলেন, চৌধুরী গোলাম মোস্তফা বাদল ভোটের শুরু থেকেই আমার পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। তিনি আমার নির্বাচনী সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছেন। তার অভিযোগ, কয়েকদিন রাণীনগরে প্রচারণা চালাতে গিয়ে নৌকার প্রার্থীর কর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। ওই ঘটনায় আমার ৬জন কর্মী আহত হন। নাম উল্লেখ করে মামলা করার পরেও পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আত্রাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্কাস আলী বলেন, যারা হামলা করেছে তারা ভাড়াটিয়া গুন্ডাবাহিনী। কে বা কারা তাদের ভাড়া করেছে পুলিশই ভালো বলতে পারবে। এখন কেউ একটা অভিযোগ করলে করতেই পারেন। কিন্তু সেটার সত্যতা কতটা রয়েছে সেটা জনগণই বিচার করবে। আমাদের ভাড়া করে কাউকে মারার কোনো প্রয়োজন নেই।
আত্রাই থানার ওসি জহুরুল ইসলাম আরো বলেন, ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত চলছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল