কার্নিয়ার কাবিয়া পাহাড়ে, কিছু পৌত্তলিক নারী তাদের পশু চরাচ্ছিল। নির্জন সেই পাহাড়ে হঠাৎ এক রাখালের দেখা পেয়ে তারা তাকে উপহাস করতে লাগল। তাদের হাসি-ঠাট্টার একপর্যায়ে তারা রাখালকে এক অদ্ভুত বাজির প্রস্তাব দিল।
নারীরা বলল, ‘শোনো রাখাল, এক নির্দিষ্ট দিনে তুমি তোমার গাড়ি আর বলদ নিয়ে এখানে ফিরে আসবে। আমরাও আমাদের সমস্ত সম্পত্তি তোমার গাড়িতে তুলে দেব। যদি তোমার বলদগুলো গাড়িটিকে একচুলও নাড়াতে পারে, তবে সব সম্পত্তি তোমার! আর যদি না পারে, তবে তোমার গাড়ি আর বলদ, সবই আমাদের হয়ে যাবে।’
রাখাল রাজি হলো। বাজির দিন ঠিক করা হলো।
নির্দিষ্ট দিনের ভোরে, রাখাল বিচক্ষণতার সঙ্গে প্রস্তুতি নিল। সে তার বলদগুলোকে পেট ভরে ব্রড বিন খাইয়ে দিল। এরপর জোয়ালটি পরীক্ষা করে দেখল মজবুত আছে কি না, প্রয়োজনে ঝালাইও করে নিল। প্রস্তুতি শেষে নির্ধারিত স্থানে পৌঁছাল।
পৌত্তলিক নারীরা আগে থেকেই জীর্ণ পোশাক, পুরোনো আসবাবপত্র, থালাবাসন-যা কিছু তাদের ছিল, সব বের করে রেখেছিল। বাজি জেতার আনন্দে তারা তাদের সব জিনিসপত্র রাখালের গাড়িতে বোঝাই করতে লাগল। তারা নিশ্চিত ছিল, রাখাল হারবে, তাই নির্দ্বিধায় তারা গাড়ি ভরে চলল। গাড়িটি বোঝাই হয়ে প্রায় নড়বড়ে অবস্থায় পৌঁছাল।
সময় হলো। রাখাল দৃঢ় হাতে লাঠিটি ধরল। অলস ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকা বলদগুলোর সামনে মাটিতে একটি ক্রস চিহ্ন আঁকল। তারপর সমস্ত শক্তি দিয়ে বলদগুলোকে চাবুক মেরে চিৎকার করে বলল- ‘ঈশ্বরের নামে এগিয়ে যাও, কারণ কেউ তোমার ক্ষতি করতে পারবে না!’
মুহূর্তের মধ্যে এক অলৌকিক ঘটনা ঘটল! বলদগুলো অনুভব করল গাড়ির ওজন পালকের মতো হালকা। তারা বিশাল ওজনের গাড়িটিকে তুলল এবং সোজা কাবিয়ার পাহাড়ে টেনে নিয়ে চলল।
পৌত্তলিক নারীরা এই দৃশ্য দেখে চিৎকার করতে লাগল। তারা বুঝতে পারল যে তাদের মূর্খতায় সব সম্পত্তি, যা ছিল সব হারিয়ে ফেলেছে। রাখালের বিশ্বাস আর বুদ্ধির কাছে তারা পরাজিত হলো।