রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা
বিচিত্রিতা

গ্রেট ওয়াল অব চায়না

গ্রেট ওয়াল অব চায়না

চীনের উত্তর গোবি মরুভূমি পূর্বে দুর্ধর্ষ মঙ্গোলদের বাস, যাদের কাজই ছিল লুটতরাজ করা। এদের ও বন্যপশুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য দীর্ঘ প্রাচীর গড়ে তুলেছে চীন। যার নাম গ্রেট ওয়াল অথবা চীনের প্রাচীর। একমাত্র চীনই শুধু এরকম প্রাচীর গড়ে তোলেনি। আজ থেকে প্রায় ১৫০০ বছর আগে রোমান শাসক হাড্ডিয়ান অসভ্য ভ্যান্ডাল এবং গথদের আক্রমণ-অত্যাচারের হাত থেকে রাজ্যের নিরাপত্তা ও প্রজাদের সুখ-শান্তি অব্যাহত রাখার জন্য আড়াআড়িভাবে কয়েকশত মাইল দীর্ঘ বেশ উঁচু প্রাচীর নির্মাণ করেন।

যার দীর্ঘ ২৬৯৫ কিলোমিটার বা প্রায় ১৬৮৪ মাইল। উচ্চতা ৪.৫৭ থেকে ৯.২ মিটার বা ১৫ থেকে ৩০ ফুট। এই প্রাচীর তৈরি করতে সময় লাগে প্রায় ১৫ বছর। আর তৈরি করা হয় ইট আর পাথর দিয়ে। প্রাচীর তৈরি হয়েছিল চিহলি উপসাগরের কূলে শানসীকুয়ান থেকে কানসু প্রদেশের চিয়াকুমান পর্যন্ত। প্রাচীরে রয়েছে একের পর এক পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। সীমান্তরক্ষীরা এখান থেকেই শত্রুদের ওপর নজর রাখতেন। কোনো শত্রু সৈন্যদল এগিয়ে আসতে দেখলে তারা মশাল জ্বেলে সংকেত পাঠাতেন পরবর্তী পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে। এভাবে একের পর এক পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে শত্রুদের আক্রমণ সংবাদ ছড়িয়ে পড়ত।

মশাল ও গোলার সংখ্যার ভিত্তিতে অন্য পর্যবেক্ষণ সুনির্দিষ্ট সংখ্যা বুঝে নিত। যদি একটি মশাল ও একটি গোলার শব্দ হতো তাহলে তারা বুঝে নিত শত্রসৈন্য ১০০ আর যদি দুটি মশাল ও দুটি গোলার শব্দ হতো তাহলে বুঝে নিত শত্রুসৈন্য ৫০০ আর তিনটি মশাল ও তিনটি গোলার শব্দ হলে শত্রুসৈন্য ১০০০ কিংবা এর চেয়ে বেশি।

তবে সম্রাট শিহুয়াংতিও যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই ঐতিহাসিক ওয়াল নির্মাণ করেছিলেন তার সেই উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয়নি। কেননা পাচিলের অনেক জায়গা ভেঙে মাঞ্চুরিয়া ও মঙ্গোল দস্যুরা চীনের মূল ভূখণ্ডে লুটপাট করার জন্য ঢুকে পড়ত। তারপর চীনারা নিজেরাই পাচিলের বাইরে এসে চাষবাস শুরু করেছে। তবে এখন এই গ্রেট ওয়াল একটি আশ্চর্য এবং পর্যটকদের জন্য অতিপুরনো নিদর্শন, যা প্রমাণ করে দস্যুদের শক্তি-সামর্থ্যের কথা।

আফতাব চৌধুরী

 

 

 

সর্বশেষ খবর