মাথাব্যথা নিয়াময়ে চাই ওষুধ। মাথা কেটে ফেলা এক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য সমাধান হতে পারে না। কিন্তু অতি বিজ্ঞদের একাংশ তেমন ব্যবস্থাপত্রই দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সন্ত্রাস দমনে তাৎপর্যপূর্ণ সাফল্য অর্জনকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী র্যাব বিলুপ্ত ঘোষণার দাবি জানাচ্ছেন তারা। র্যাবকে বিলুপ্ত করার দাবি জানানো হচ্ছে এ বাহিনীর কোনো কোনো সদস্যের বিধিবহির্ভূত কার্যক্রমের প্রেক্ষিতে। সন্দেহ নেই র্যাব সদস্যদের এক ক্ষুদ্র অংশের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অবৈধ চর্চার অভিযোগ রয়েছে। অপরাধ দমনের বদলে অপরাধীদের হয়ে কাজ করার অভিযোগও উঠেছে। এ অভিযোগ কতটা সত্যি তা যথাযথ তদন্তে উদ্ঘাটিত হতে পারে। এ জন্য যারা দায়ী তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও কাম্য। কিন্তু তার বদলে র্যাবের বিলুপ্তি কী ধরনের সমাধান, তা আমাদের বোধগম্য নয়। র্যাব গঠিত হয়েছিল এক দশক আগে। এই এক দশকে সন্ত্রাস দমন ও আইনশৃঙ্খলার উন্নতির ক্ষেত্রে দৃষ্টিগ্রাহ্য সাফল্য দেখিয়েছে তারা। র্যাবের কারণেই জঙ্গিবাদের অভিশাপ থেকে জাতি রক্ষা পেয়েছে। রাজধানীর বেশির ভাগ রাস্তাঘাট এক দশক আগে সন্ধ্যার পর চলে যেত ছিনতাইকারী ও সন্ত্রাসীদের দখলে। চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য মানুষ ছিল অসহায়। জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে এই এলিট ফোর্স সত্যিকার অর্থে সাফল্য দেখিয়েছে। সন্দেহ নেই আলো জলমলে সাফল্যের পাশাপাশি কালো চাদরে ঢাকা গ্লানিও রয়েছে র্যাব নামের এলিট ফোর্সের। অপরাধ দমনের বদলে অপরাধ প্রবণতায় জড়িত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে এর কোনো কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে। যে অভিযোগ থেকে মুক্ত নয় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত অন্য সব বাহিনী। তা হলে কী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সব বাহিনীর বিলোপ চাইতে হবে। দেশকে ঠেলে দিতে হবে মাৎস্যন্যায়ের দিকে। আমাদের মতে, শুধু র্যাব নয়, যে কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিধিবদ্ধ পথে চলতে হবে। এসব বাহিনীর কেউ আইন ভঙ্গ কিংবা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু কোনো অবস্থায়ই বাহিনীর বিলুপ্তি নয়। মাথাব্যথার অজুহাতে যারা মাথা কেটে ফেলার প্রেসক্রিপশন দিচ্ছেন, তারা নিজেদের মানসিক সুস্থতা সম্পর্কে সংশয় সৃষ্টি করছেন যা কোনোভাবেই বাঞ্ছনীয় নয়।