লাগাতার অবরোধ ও হরতালের মধ্যেও দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস পরীক্ষাসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পক্ষ থেকে। কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে চৌধুরী উপাচার্যদের এক মতবিনিময় সভায় এ নির্দেশনা দেন। রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা যখন জিম্মি হতে চলেছে তখন এ নির্দেশনা বিশেষ তাৎপর্যের দাবিদার। হরতাল-অবরোধে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা সম্পর্কে উপাচার্যদের কেউ কেউ উদ্বেগ প্রকাশ করলেও শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে তারা ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। আজকের যুগে শিক্ষাদীক্ষায় যে জাতি অগ্রসর সে জাতিই যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সফল হবে। বাংলাদেশ আয়তনে একটি ছোট দেশ। ক্ষুদ্র এই দেশে ১৬ কোটিরও বেশি লোকের বসবাস। তারপরও বাংলাদেশ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দৃষ্টিকাড়া অগ্রগতির পরিচয় দিতে সক্ষম হয়েছে শিক্ষা খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য। বাংলাদেশের অগ্রগতির এই ধারা অব্যাহত রাখা এবং মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে আবির্ভাবের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে এ ক্ষেত্রে কোনো হেলাফেলার অবকাশ থাকা উচিত নয়। বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট যত জটিলই হোক না কেন, তা এক সময় কেটে যাবে। কিন্তু শিক্ষা ক্ষেত্রে জাতি পিছিয়ে পড়লে সে ক্ষতি কখনো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না। ফলে হরতাল-অবরোধ রাজনৈতিক সহিংসতাকে পাশ কাটিয়ে শিক্ষা খাতকে এগিয়ে নেওয়া দলমত নির্বিশেষে সবারই কাম্য হওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানের নির্দেশনা বিশেষ তাৎপর্যের দাবিদার। আমরা আশা করব এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে সরকারি-বেসরকারি নির্বিশেষে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় সক্রিয় হবে। দেশের ভবিষ্যতের কথা মনে রেখে অবরোধ আহ্বানকারী রাজনৈতিক দলগুলোও দেশপ্রেমসুলভ মনোভাব নিয়ে শিক্ষাঙ্গনকে অবরোধ-হরতালের আওতামুক্ত রাখার ঔদার্য দেখাবে।