মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

বঙ্গোপসাগরের জলদস্যুতা

রাজনৈতিক কানেকশন ভাঙতে হবে

বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুর উৎপাত মত্স্যজীবীদের জন্য নিত্য বিড়ম্বনা ডেকে আনছে। গত দুই সপ্তাহে চট্টগ্রাম উপকূলে ঘটেছে মাছ লুট ও মুক্তিপণ আদায়ের অন্তত ২০টি ঘটনা। কোস্টগার্ডের চোখ ফাঁকি দিয়ে জলদস্যুরা তাদের তত্পরতা অব্যাহত রেখেছে। মত্স্যজীবীদের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম উপকূলে ২৫টির মতো জলদস্যু গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। প্রতিদিনই তারা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের কর্মকাণ্ড। জলদস্যুদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কিছু রাজনৈতিক নেতা এবং প্রশাসনের একাংশের সম্পর্ক রয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন তারা। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত পাঁচ বছরে চট্টগ্রাম চ্যানেলে কমপক্ষে আড়াই হাজার মাছের ট্রলারে ডাকাতি হয়েছে। এ সময় জলদস্যুদের হাতে নিহত হয়েছেন শতাধিক মত্স্যজীবী। আহত হয়েছেন কয়েকশ’। গত পাঁচ বছরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— ২০১১ সালের মার্চে জলদস্যুদের বাধা দিতে গিয়ে খুন হন ১২ জন। একই বছর নভেম্বরে হত্যা করা হয় ১৪ মত্স্যজীবী। ২০১৩ সালের ২৫ মার্চ নির্মমভাবে হত্যা করা হয় ৩১ মত্স্যজীবীকে। জলদস্যুদের উৎপাত শুধু চট্টগ্রামেই সীমাবদ্ধ নয়, সুন্দরবনসংলগ্ন উপকূলেও প্রায়ই অনুভূত হয় তাদের অপ্রতিরোধ্য দাপট। মত্স্যজীবীরা বাধ্য হয়ে জলদস্যুদের সঙ্গে সমঝোতা করে সাগরে মাছ ধরতে যান। বড় অঙ্কের মাসহারা দিয়েও অনেক সময় রক্ষা পাওয়া যায় না। বাংলাদেশের সমুদ্রসীমাকে বলা হয় মাছের খনি। জলদস্যুদের ভয়ে মত্স্যজীবীরা সাগরে মাছ শিকারে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন। এমনিতেই সাগরে মাছ শিকার করতে হয় ঝড়ঝঞ্ঝাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে। দস্যুদের উৎপাত মত্স্যজীবীদের মাছ শিকার আরও বেশি অনিরাপদ করে তুলেছে। জলদস্যুতা রোধে কোস্টাল গার্ডের টহল জোরদার করা হলেও তাতে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসছে না দস্যুদের সঙ্গে অসৎ রাজনীতিক ও প্রশাসনের অসৎ কর্মকর্তাদের যোগসাজশ থাকার কারণে। প্রশাসন ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃত্ব সৎ হলে জলদস্যুদের শিকড় উপড়ে ফেলা সহজেই সম্ভব। দেশের সাগরপ্রান্তের

নিরাপত্তার স্বার্থে জলদস্যুতা দমনে তাদের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর