বুধবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক

আগামী দিনগুলোতে আরও নিবিড় হোক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সম্পর্কে সে দেশের চেয়ে বাইরের দুনিয়ার মানুষের আগ্রহ যে বেশি এটি একটি পরীক্ষিত সত্য। পশ্চিমা দুনিয়ায় মার্কিনিদের মধ্যে ভোটদানের আগ্রহ সব চেয়ে কম। কয়েক দিন ধরে এবং নানা পন্থায় ভোটদানের সুযোগ থাকলেও গড়ে অর্ধেক মানুষই ভোট কেন্দ্রে যান না। মার্কিনিরা তাদের দেশের নির্বাচনের ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহী না হলেও বাইরের দুনিয়ার তীক্ষ নজর থাকে হোয়াইট হাউসের অধিপতি হয়ে কে আসছেন সে দিকে। সমীকরণটা খুবই সোজা। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সব চেয়ে প্রভাবশালী মোড়ল রাষ্ট্র। আর সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাব প্রতিপত্তির দিক থেকে তারা দৃশ্যত অপ্রতিদ্বন্দ্বী। অর্থনৈতিক দিক থেকে চীনের উত্থান সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র এখনো শীর্ষ আসনে। সামরিক দিক থেকে তাদের তুলনা নেই বললেই চলে। স্বভাবই যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে কে জিতবে তা নিয়ে বাংলাদেশেও আগ্রহের ব্যারোমিটার একেবারে উঁচুর দিকে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক। দুই দেশের বাণিজ্যিক ভারসাম্যও বাংলাদেশের পক্ষে। যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক লাখ বাংলাদেশির বসবাস। এদের একাংশ সে দেশের নাগরিকত্ব পেলেও নাড়ির সঙ্গে সবার সম্পর্ক বিদ্যমান। ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশের মানুষ ডেমোক্রেটদের সঙ্গে। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ট্রাম্প মুসলমান এবং অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অসহিষ্ণু ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ায় বাংলাদেশের মানুষের সমর্থনের পাল্লা ডেমোক্রেটদের পক্ষেই যে বেশি সন্দেহ নেই। স্বভাবতই ট্রাম্প জিতলে বাংলাদেশের সঙ্গে তার প্রশাসনের সম্পর্ক কেমন হবে তা নিয়েও উৎকণ্ঠা রয়েছে বিভিন্ন মহলে। বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাট অবশ্য সম্পর্ক অবনতির সব আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে বাংলাদেশিদের আশ্বস্ত করেছেন। বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ফলাফল বাংলাদেশের সঙ্গে তার দেশের সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না। ক্ষমতায় যেই আসুক বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আগামীদিনে আরও বৃদ্ধি পাবে। যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন নিয়ে যে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে তেমন পরিবেশ সৃষ্টি হবে এমনটিইও আশা করেছেন তিনি। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এ বক্তব্য বাংলাদেশের জন্য যে স্বস্তির সন্দেহ নেই। আমরাও আশা করব দুই দেশের জনগণের স্বার্থেই বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আগামীদিনগুলোতে আরও নিবিড় হবে।

সর্বশেষ খবর